হাইকোর্টের নির্দেশে দুই বোনকে বাসায় তুলে দিল পুলিশ

গুলশানে বাবার বাড়ির সামনে দুই বোন মুশফিকা ও মোবাশ্বেরা
প্রথম আলো ফাইল ছবি

হাইকোর্টের নির্দেশ পেয়ে রাজধানীর গুলশানের দুই বোন মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফাকে গুলশানের বাড়িতে তুলে দিয়েছে পুলিশ। আজ সোমবার রাতে গুলশান থানার পুলিশ ওই দুই বোনকে বাড়িতে তুলে দেয়। এর আগে আজ ছুটির দিনে আদালত বসে ওই দুই বোনকে অবিলম্বে বাড়িতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে গুলশান থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এ কথা জানান। তিনি বলেন, গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তাঁকে ফোন করে ওই দুই বোনকে বাসায় তুলে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওসি জানিয়েছেন, তিনি (ওসি) আদালতের আদেশমতো মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফাকে গুলশানের বাড়িতে উঠিয়ে দিয়েছেন এবং বাড়ির সামনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন।

আরও পড়ুন

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে এলে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রাত সোয়া সাতটার দিকে স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ ওই আদেশ দেন। নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে সোমবার রাতেই তা আদালতকে জানাতে বলা হয়েছিল।

‘গুলশানে বাড়ির সামনে দুই বোনের অবস্থান’ শিরোনামে আজ প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটিসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন ও খবর বিবেচনায় নিয়ে আদেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্ট দুই বোনের নিরাপত্তায় আগামী ১ নভেম্বর পর্যন্ত ওই বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করতেও নির্দেশ দেন।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, গুলশান ২-এ ৯৫ নম্বর সড়কের ওপর প্রায় ১০ কাঠা জমির ওপর বাড়িটি। গৃহকর্তার মৃত্যুর পর মালিকানা নিয়ে বিরোধে তাঁর দুই মেয়ে অবস্থান নিয়েছেন বাড়ির সামনে। তাঁদের দাবি, বাড়ির দখল বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের হাতে। তিনি কিছুতেই ওই বাড়িতে তাঁদের ঢুকতে দিচ্ছেন না। অবশ্য গৃহকর্তা মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের ছোটবেলার বন্ধু ও আইনজীবী মো. ওয়াজিউল্লাহর ভাষ্য আলাদা। ১০ অক্টোবর মোস্তফা জগলুলের মৃত্যুর পর আঞ্জু কাপুরকেও আইনগত সহযোগিতা তিনিই দিচ্ছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আঞ্জু কাপুর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি চাইছেন, বাড়ির মালিকানা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে তা মিটে যাক। আস্থার সংকট থেকে তিনি বাড়ির দরজা খুলছেন না।

আরও পড়ুন

প্রতিবেদনে বলা হয়, মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ পেশায় পাইলট ছিলেন। ভাইবোনদের মধ্যে শুধু সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশে নেই। বাড়ির সামনে অবস্থান নেওয়া মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরার সঙ্গে রোববার কথা হলে তাঁরা জানান, গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত তাঁরা বাড়ির সামনে ছিলেন। রোববারও দিনভর গাড়ির ভেতর কেটেছে তাঁদের। তাঁরা বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

আদালত দুই বোন মুশফিকা ও মোবাশ্বেরাকে এবং আঞ্জু কাপুরকে (মোস্তফা জগলুলের দ্বিতীয় স্ত্রী) আগামী ১ নভেম্বর আদালতে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন। দুই বোনকে বাড়িতে প্রবেশ করতে না দেওয়া কেন তাঁদের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।