পর্নোগ্রাফির উদ্দেশ্যে ধর্ষণের ভিডিও করা হয়: পুলিশ

ধর্ষণপ্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাটে ২৫ দিন আটকে রেখে তরুণীকে ধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে যাঁর নাম এসেছে, তাঁকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর নাম মাসুদ বলে জানা গেছে। তবে ব্যারিস্টার পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি দেশে আছেন, নাকি বিদেশে, সেটা নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাসুদের নির্দেশে তরুণীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করতেন গ্রেপ্তার সালমা ওরফে ঝুমুর। গোপনে মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিও মাসুদকে পাঠিয়ে দিতেন সালমা। পর্নোগ্রাফির উদ্দেশ্যে এসব ভিডিও ধারণ এবং সেগুলো আদান-প্রদান করা হয়। আসামিরা গ্রেপ্তার হওয়ার আগে তাঁদের মুঠোফোন ফেলে দিয়েছেন। তবে মুঠোফোন কোথায় ফেলেছেন, সেটা তাঁরা বলছেন না। মুঠোফোনগুলো উদ্ধার এবং মাসুদকে গ্রেপ্তার করা গেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে কর্মকর্তারা আরও বলেন, সালমা একসময় একটি সুপারশপে চাকরি করতেন। বিয়ের পর তাঁর স্বামী ভারতে চলে যান। বছরের বেশির ভাগ সময় তিনি সেখানে থাকেন। সালমা ওই তরুণীর সঙ্গে মাসুদের ভাড়া করে দেওয়া বাসায় থাকতেন। এ জন্য থাকা-খাওয়ার পাশাপাশি তাঁকে মাসে চার হাজার টাকা বেতন দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন মাসুদ।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাসুদ ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ব্যারিস্টার পরিচয়ে তাঁকে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকতেন।

মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পুলিশের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) আজিজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মাসুদ আসলে ব্যারিস্টার কি না, সেটা যাচাই-বাছাই করতে হবে। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন

মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ সূত্র জানায়, তিন দিনের রিমান্ড শেষে আজ বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার আসামি সান (২৬), রকি (২৯), হিমেল (২৭) এবং তাঁদের সহায়তাকারী সালমা ওরফে ঝুমুরকে আদালতে হাজির করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য না পাওয়ায় তাঁদের আবার পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত আবার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মোহাম্মদপুরের একটি ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট থেকে গত শনিবার এক তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, শনিবার রাতে বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে ওই তরুণী জানালা দিয়ে চিৎকার করে স্থানীয় এক বাসিন্দার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ওই ব্যক্তি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন করলে পুলিশ গিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করে।

ভুক্তভোগী তরুণী উদ্ধার হওয়ার পর চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এজাহার অনুযায়ী, তরুণীটির মা ও বাবার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়েছে। পরে তাঁরা অন্যত্র বিয়ে করেছেন। তরুণীটি থাকতেন তাঁর বড় বোনের বাসায়। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা তাঁর পূর্বপরিচিত।

এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।