গরিবকে ভোগান্তিতে ফেলা ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই ৭ দিনেও

পাথরঘাটার কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা কমিউনিটি সেন্টার বাজারের চালের ডিলার ছগির হাওলাদার
ছবি: সংগৃহীত

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চালে ওজনে কম দিয়ে আসছিলেন ডিলার ছগির হাওলাদার। সম্প্রতি তিনি হাতেনাতে ধরা পড়েন। ওই ঘটনার পর সাত দিন ধরে তিনি চাল বিতরণ বন্ধ রেখেছেন। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা কমিউনিটি সেন্টার বাজারে তাঁর দোকান থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তিনটি ওয়ার্ডের উপকারভোগীরা চাল নিয়ে থাকেন। তাঁর কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন গরিব লোকজন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন কালমেঘা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আইউব আলী হাওলাদার। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, খাদ্যবান্ধব চালের কালমেঘা ঘুটাবাছা কমিউনিটি সেন্টারের ডিলার পয়েন্ট থেকে কালমেঘা ইউপির ৫, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৪০৬ জন উপকারভোগী চাল নিয়ে থাকেন। ৭ মার্চ ডিলার চাল বিতরণ শুরু করলে কিছু উপকারভোগী ৩০ কেজি চালের বস্তা নেন। পরে কয়েকজন উপকারভোগী দেখেন, ৩০ কেজির বস্তায় তিন থেকে পাঁচ কেজি করে চাল ওজনে কম দেওয়া হচ্ছে।

আইউব আলী হাওলাদার বলেন, প্রতিটি বস্তার মুখ সেলাই করার কথা থাকলেও ডিলারের দোকান থেকে বিতরণ করা চালের বস্তার মুখ রশি দিয়ে বেঁধে দেওয়া ছিল। এ ঘটনা কালমেঘা ইউপির পক্ষ থেকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শরীফ মোল্লাকে জানানো হলে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওজনে কম দেওয়া তিন বস্তা চাল জব্দ করেন। অভিযোগের সত্যতা পান ওই কর্মকর্তা।

এ ঘটনায় ‘১০ টাকার চালে ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ’ শিরোনামে প্রথম আলোতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই ঘটনায় ডিলার ছগির হাওলাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হলেও গত সাত দিনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পাথরঘাটা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর। বরং খাদ্যবান্ধব চালের কালমেঘা ঘুটাবাছা কমিউনিটি সেন্টারের ডিলার পয়েন্টে সাত দিন ধরে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ বন্ধ রয়েছে।

১০ টাকা দামের চালের উপকারভোগী ঘুটাবাছা গ্রামের হাবিব সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ টাকা চালের তালিকায় আমার স্ত্রী নাসিমা বেগমের নাম রয়েছে। কিন্তু ডিলার ছগির হোসেন আমাকে উপকারভোগীর কার্ড দেয়নি। তবে দুবার চাল পেয়েছি। এবার চাল বিতরণের কথা শুনে ডিলারের দোকানে গিয়ে দোকান বন্ধ পেয়েছি। চাল দেওয়া হয়নি।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে ঘুটাবাছা কমিউনিটি সেন্টার বাজারের খাদ্যবান্ধব চালের ডিলার ছগির হাওলাদার বলেন, ‘উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছে। দু–এক দিনের মধ্যেই চাল বিতরণ করা যাবে।’

পাথরঘাটা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শরীফ মোল্লা বলেন, কালমেঘা ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। সম্ভবত বুধবার চাল বিতরণ শুরু করা হবে। ডিলার ছগিরের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে বরং বিষয়টি নিয়ে নিউজ করতে বারণ করেন।

আরও পড়ুন

এ ব্যাপারে কালমেঘা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম নাছির প্রথম আলোকে বলেন, ঘুটাবাছা কমিউনিটি সেন্টার বাজারের ডিলার ছগির হাওলাদার শুরু থেকেই ওজনে কম চাল দিয়ে আসছিলেন। এবার হাতেনাতে ধরার পরও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর ওই ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করছেন। এতে চাল বিতরণ বন্ধ রয়েছে। তাই শিগগিরই ওই ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে চাল বিতরণ চালিয়ে নিতে উদ্যাগ নেওয়া জরুরি।