তীব্র স্রোতে ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী সড়ক

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র স্রোতে ভেঙে গেছে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী প্রধান সড়ক। গতকাল শুক্রবার বিকেলে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কাজলাপাড়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র স্রোতে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী প্রধান সড়ক ভেঙে গেছে। এতে খোলাবাড়ী নৌ-থানা থেকে দেওয়ানগঞ্জের সঙ্গে সড়কপথে যান চলাচলসহ সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছে ১০টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে পানির তোড়ে পুরো সড়কটি ভেঙে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে নদে ব্যাপকভাবে পানি বাড়ছে। একই সঙ্গে নদে তীব্র স্রোত বইছে। গতকাল বিকেলে তীব্র স্রোতে দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী সড়কটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সড়কটি গত বছর নদে বিলীন হয়েছিল। পরে মাটি ও বালুর বস্তা ফেলে সড়কটি মেরামত করা হয়। তখন থেকে কোনোমতে যান চলাচল করছিল। এবার পুরো সড়কটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বাহাদুরাবাদ নৌ–থানা, চিকাজানি, খোলাবাড়ী, হাজারীপট্টি, চর মাগুরীহাট, মোন্নে বাজার, মগুলবাজার, ফারাজিপাড়া, চর বাহাদুরাবাদসহ ১০টি এলাকার মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে।

আরও পড়ুন

সুলতান মাহমুদ নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী সড়কের কাজলাপাড়া এলাকায় এক কিলোমিটার সড়ক ভাঙনের কবলে পড়ে ছিল। তখন প্রায় ৭০০ মিটার সড়ক নদে বিলীন হয়ে যায়। কয়েক দিন সড়কপথে পুরো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মাধ্যমে ভাঙা অংশে মাটি ও বালুর বস্তা ফেলে যোগাযোগ সচল করা হয়েছিল। এবার নদের তীব্র স্রোতে পুরো সড়ক ভেঙে গেছে। এখন পুরো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দুই পাশের লোকজন নৌকায় পারাপার হচ্ছে।

কাজলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, ২০২০ সালে সড়কটিতে প্রথম ভাঙন দেখা দেয়। গত বছর বর্ষায় ভাঙন দেখা দিলে স্থানীয়ভাবে কিছু বালুর বস্তা ও বাঁশ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পরে শুকনো মৌসুমে বালুর বস্তা ও মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছিল। এতে কোনোমতে যান চলাচল করছিল। এবার আবার সড়কটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন

চিকাজানি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন আহাম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, বাহাদুরাবাদ নৌ-থানা, খোলাবাড়ী, মোন্নে বাজার, ফারাজিপাড়ার বাসিন্দাদের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি গত দুই বছর ধরে ভাঙনের কবলে পড়েছে। সঠিকভাবে ব্যবস্থা নিলে হয়তো সড়কটি রক্ষা করা যেত। এবার এক ধাক্কায় সব ভেঙে গেছে। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।

পাউবোর জামালপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন। গত বছর সেখানে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। ভালোভাবেই নিচ থেকে জিও ব্যাগ দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এলজিইডির পক্ষ থেকে সড়কটি আবার নির্মাণ করা গেলে হয়তো এবার ভাঙনের কবলে পড়ত না। কিন্তু সেটি করা হয়নি। এবার পুরো সড়কটি ভেঙে গেছে। পানি না কমা পর্যন্ত সেখানে তাঁদের কিছুই করার নেই।