দ্বিতীয় দিন কর্মবিরতি পালন করল কর্মকর্তা পরিষদ

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক কর্মকর্তাকে বদলির জের ধরে প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কর্মকর্তা পরিষদের (অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন) বিরোধের অবসান হয়নি। সেই সঙ্গে আজ সোমবারও কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। ফলে আজ নিজ কার্যালয়ে বসতে পারেননি রেজিস্ট্রার। দিনভর কার্যালয়টি বন্ধ দেখা গেছে।

এদিকে কর্মকর্তা পরিষদ প্রধান প্রকৌশলীর অব্যাহতিসহ আট দফা দাবি তুলে আবারও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাসংক্রান্ত দপ্তর এই কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলেও বলা হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রীতম কুমার দাস স্মারকলিপি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্মারকলিপির একটি কপি হাতে পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিকভাবে আলোচনা চলছে। আশা করছি, খুব শিগগির সমস্যার সমাধান হবে।’

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্টোর কর্মকর্তার বদলি নিয়ে প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কর্মকর্তা পরিষদের বিরোধ দেখা দেয়। গত মঙ্গলবার এই বিরোধের জের ধরেই কর্মকর্তারা প্রধান প্রকৌশলীর পথ আগলে গাড়ির চাবি কেড়ে নেন। প্রতিবাদে পরদিন প্রকৌশল বিভাগ এক দিনের কর্মবিরতি পালন করে। প্রকৌশল বিভাগের দাবি, কর্মকর্তার বদলির মিথ্যা অভিযোগ তুলে কর্মকর্তা পরিষদ প্রধান প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করেছেন। অন্যদিকে কর্মকর্তা পরিষদ বলছে, দায়িত্বরত প্রধান প্রকৌশলী অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে এক কর্মকর্তাকে বদলি করায় তারা প্রতিবাদ করেছে। কাউকে লাঞ্ছিত করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

গতকাল রোববার কর্মকর্তা পরিষদের নেতারা রেজিস্ট্রারকে কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন। বিপরীতে প্রকৌশল বিভাগের বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুনর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখানে আলোচনার কিছু নেই। আমরা আট দফা দাবি দিয়েছি। দাবি মানলেই আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করব।’

কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে তাঁরা বলায় আমি কার্যালয় থেকে চলে আসছি। পরে অন্য দপ্তরে মিটিং করেছি। আর কার্যালয়ে যাওয়া হয়নি। বিষয়টি উপাচার্য মহোদয় অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে একসঙ্গে বসে কথা বলতে বলেছেন।
বিজন কুমার ব্রহ্ম, রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব), পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, রোববার শুরু করা কর্মবিরতির ধারাবাহিকতায় সোমবার কর্মকর্তা পরিষদ নেতারা ক্যাম্পাসে এলেও কাজে যোগ দেননি। সকালে রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম কার্যালয়ে এলেও কিছুক্ষণ পরই তাঁকে আবারও চলে যেতে বলা হয়েছে। পরে তিনি কার্যালয় ছেড়ে গেলে কার্যালয়টি তালা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) বিজন কুমার ব্রহ্ম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে তাঁরা বলায় আমি কার্যালয় থেকে চলে আসছি। পরে অন্য দপ্তরে মিটিং করেছি। আর কার্যালয়ে যাওয়া হয়নি। বিষয়টি উপাচার্য মহোদয় অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে একসঙ্গে বসে কথা বলতে বলেছেন। কিন্তু তাঁরা কেউ কারও সঙ্গে আলোচনায় বসেননি। আমরা তাঁদের নিয়ে আলোচনা বসার চেষ্টা করছি। আশা করছি, আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে।’