বকেয়া পরিশোধ না হলে আন্দোলন

পরিশোধের দাবিতে যুগ্ম শ্রম পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন খুলনার ব্যক্তিমালিকানাধীন মহসেন জুট মিলের শ্রমিকেরা
সংগৃহীত

প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ), গ্র্যাচুইটিসহ যাবতীয় পাওনা এককালীন পরিশোধের দাবিতে যুগ্ম শ্রম পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন খুলনার ব্যক্তিমালিকানাধীন মহসেন জুট মিলের শ্রমিকেরা। নগরের বয়রা নূরনগর এলাকায় যুগ্ম শ্রম পরিচালকের কার্যালয়। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ঘেরাও কর্মসূচি চলে।

এ সময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে শ্রমিকেরা বলেন, ৭ বছর আগে মিলটি বন্ধ ঘোষণা করা হলেও ৩৪৭ জন শ্রমিক এখনো তাঁদের পাওনা প্রায় ১০ কোটি টাকা বুঝে পাননি। এর ফলে তাঁরা আর্থিক সংকটে রয়েছেন। মিলমালিক সবশেষ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অমান্য করে একের পর এক ওয়াদা ভঙ্গ করছেন। তাঁরা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসক ও যুগ্ম শ্রম পরিচালকের সহযোগিতা কামনা করেন। এ ছাড়া পাওনা টাকা আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

সমাবেশে শ্রমিকনেতারা ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান, ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় মহসেন জুট মিলস শ্রমিক কলোনিতে শ্রমিক জনসভা এবং ২০ সেপ্টেম্বর খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সমাবেশে বক্তব্য দেন মহসেন জুট মিল সিবিএর সাবেক সভাপতি শহিদুল্লাহ খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল, আসাব উদ্দিন, মাহাতাব উদ্দিন, ইঞ্জিল কাজী, মো. এরশাদ আলী, ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর খুলনার পরিচালক মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৬ জুলাই আমাদের আহ্বানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটা ত্রিপক্ষীয় সভা হয়েছিল। সেখানে সিদ্ধান্ত ছিল, মালিকপক্ষ এক মাসের মধ্যে পাওনা পরিশোধ করবে। তবে তা তারা করেনি। মিলের জমি বিক্রি করে তারা টাকা শোধ করবে জানিয়ে এখন আরও এক মাস সময় চাচ্ছে। এ ধরনের আশ্বাস অবশ্য বারবার দিয়েছে মালিকপক্ষ। তবে সেদিনের সিদ্ধান্তের অবমাননার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে শ্রম আদালতে একটা ফৌজদারি মামলাও করা হয়েছে। ১৭ সেপ্টেম্বর ওই মামলার শুনানি আছে।’

খুলনা নগরের ফুলবাড়ী গেট এলাকার বেসরকারি মহসেন জুট মিলটি চলতি মূলধন ও কাঁচা পাটের অভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি-বেতন দিতে না পারায় কর্তৃপক্ষ ২০১৩ সালের ১৯ জুলাই এক দাপ্তরিক আদেশের মাধ্যমে ২০১৩ সালের ২০ জুন থেকে ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই পর্যন্ত মিল লে-অফ ঘোষণা করে। লে-অফ শেষে ১৭ জুলাই মিলটি চালু হওয়ার কথা ছিল। এর আগে ১৬ জুলাই রাতে মিলের মূল ফটকে নোটিশ লাগিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

ওই সময় মিলের নির্বাহী পরিচালক তাওহিদ-উল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়, শ্রম আইন অনুযায়ী ১৭ জুলাই সকাল ৬টা থেকে মিলের ৬৩১ জন শ্রমিক ও ৩৬ জন কর্মচারীকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হলো। আর্থিক দুরবস্থা সত্ত্বেও তাঁদের আইনানুগ ক্ষতিপূরণ, লে-অফ বেনিফিট, গ্র্যাচুইটির পাওনাদি অর্থ সংস্থান সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে।

আরও পড়ুন