বাউফলের সেই জহুরজান বিবিকে পাকা ঘর দিচ্ছে পুলিশ

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ অসহায় বৃদ্ধা জহুরজান বিবির হাতে ঈদের উপহার হিসেবে কাপড়, বিভিন্ন প্রকারের ফল, খাবার ও ইফতারসামগ্রী তুলে দেন
ছবি: প্রথম আলো

বয়সের ভারে ন্যুব্জ ৯৫ বছরের বৃদ্ধা জহুরজান বিবিকে একটি টিনশেড পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত ২০ বছর ধরে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামে অন্যের বাড়িতে একটি খুপরি ঘরে একাই বসবাস করছিলেন এ বৃদ্ধা।

জহুরজান বিবির জীবনের দুঃখগাথা নিয়ে গত শনিবার প্রথম আলো অনলাইনে ‘আলো-বাতাস ঢোহে হেইরম একটা ঘরে থাইক্যা মরতে চাই’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে প্রথম আলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে প্রথম আলোর বাউফল প্রতিনিধি এ বি এম মিজানুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে জহুরজান বিবির বাড়িতে যান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাউফল সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) শাহেদ আহমেদ চৌধুরী, বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ অসহায় বৃদ্ধা জহুরজান বিবির হাতে ঈদের উপহার হিসেবে কাপড়, বিভিন্ন প্রকারের ফল, খাবার ও ইফতারসামগ্রী তুলে দেন। তখন খুশিতে কেঁদে ফেলেন জহুরজান বিবি। এ সময় পুলিশ সুপার ওই বৃদ্ধাকে টিনশেড পাকা ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আমাদের পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহম্মেদ স্যারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাঁর নির্দেশে সরেজমিনে সত্যতা যাচাই করার জন্য এসেছি। প্রথম আলোর বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদনের কথা স্যারকে অবহিত করেছি। তিনি (বেনজীর আহম্মেদ) ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’

মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ আরও বলেন, ঘর নির্মাণের জন্য যে পরিমাণ জমির প্রয়োজন হবে, তা দিতে রাজি হয়েছেন জহুরজান বিবির আশ্রয়দাতা ওই বাড়ির বাসিন্দা আবদুল মোতালেব মৃধা (৭০)। শিগরির জহুরজান বিবির জন্য সুন্দর একটি ঘর নির্মাণ করার ব্যবস্থা করা হবে।

জহুরজান বিবি বলেন, ‘আল্লাহ তোমার (সাংবাদিক) উছিলায় আমার মনের আশা পূরণ করছে। মরার আগে মনে হয় আলো-বাতাস ঢোহে, হেইরম একটা ঘরে থাইক্যা (থেকে) মরতে পারমু। আল্লাহ তোমারেও ভালো করবে।’

বয়সের ভারে ন্যুব্জ জহুরজান বিবি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর বয়স ৯৫ বছরের বেশি। তাঁকে দেখভাল করার মতো কেউ নেই। কোনো বেলা খেয়ে, কোনো বেলা না খেয়েই চলছে তাঁর জীবন। এমনকি মাথা গোঁজার মতো নিজের কোনো ঘরও নেই তাঁর। বাধ্য হয়ে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামে আবদুল মোতালেব মৃধা নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে একটি খুপরি ঘরে প্রায় ২০ বছর ধরে একাকি বসবাস করছেন তিনি।

আরও পড়ুন