মাতৃহারা হনুমানশাবকটিকে বাঁচানো গেল না

মাতৃহারা হনুমানশাবকটি। গতকাল সোমবার দুপুরে জানকীছড়া রেসকিউ সেন্টারে
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে উদ্ধার হওয়া মাতৃহারা চশমাপরা হনুমানশাবকটিকে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকার জানকীছড়া রেসকিউ সেন্টারে শাবকটি মারা যায়।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) উদ্যানের শৌচাগার এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হনুমানশাবকটির মা মারা যায়। এ সময় শাবকটি ছিল তিন-চার দিন বয়সী। সেখান থেকে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লোকজন শাবকটিকে উদ্ধার করে জানকীছড়া রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে আসেন। সেখানেই তার শুশ্রূষা ও পরিচর্যা চলছিল।

হনুমানশাবকটির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা চঞ্চল গোয়ালা প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ভালো অবস্থায় শাবকটিকে তার জন্য নির্দিষ্ট ঝুড়ির মধ্যে রেখে এসেছিলেন। এ সময় তার মধ্যে অসুস্থতার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে গিয়ে দেখেন মরে আছে।

শাবকটিকে নিয়ে আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোয় ‘মাতৃহারা হনুমানশাবক পাচ্ছে মানুষের যত্ন ভালোবাসা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।

চঞ্চল গোয়ালা বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) বিকেলে রেখে আসার সময় আমাকে ছাড়তে চাইছিল না। ঝুড়িতে রাখার সময় লেপটে ছিল। এত অ্যাকটিভ ছিল। ও যে মারা যাবে, বুঝতে পারিনি। মনটাই খারাপ হয়ে আছে। একেবারে মানুষের বাচ্চার মতো ছিল। সব সময় আদর চাইত।’

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাচ্চাটা খুব কিউট ছিল। আসলে এসব বাচ্চা দুই-তিন মাস মায়ের পেটের সঙ্গে ঝুলে থাকে। মায়ের দুধেরও কোনো বিকল্প নেই। আজকে (গতকাল মঙ্গলবার) কবর দিয়ে আসলাম।’