জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে চুরির চেষ্টার ঘটনার জেরে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল হলে চুরির চেষ্টার ঘটনার জেরে পদত্যাগ করেছেন হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোতাহার হোসেন। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চুক্তিভিত্তিক) রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

আরও পড়ুন

গত শনিবার রাত তিনটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়া হল, শেখ হাসিনা হল ও বেগম সুফিয়া কামাল হলে ঢুকে চুরির চেষ্টা করে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি। এ সময় ছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হেনস্তা করে ওই ব্যক্তি। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

চুরির চেষ্টার প্রতিবাদে গতকাল রোববার রাতে আবাসিক হলে নিরাপত্তা জোরদারসহ ১৩ দফা দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন বেগম সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীরা। পরে হল প্রশাসনের আশ্বাসে রাত ১০টার দিকে ছাত্রীরা হলে ফিরে যান তাঁরা।
বেগম সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে মোতাহার হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনা ঘটেছে তিন হলে, কিন্তু প্রতিবাদ করেছে আমার হলের শিক্ষার্থীরা। এটা পরিকল্পিত ছিল। এটার পেছনে কেউ কাজ করেছে। হলে চুরির চেষ্টার ঘটনার প্রতিবাদে আমি পদত্যাগ করেছি।’

ওই হলে নতুন প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) অধ্যাপক কে এম আককাছ আলী। যোগ দেওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি ওই হলের দায়িত্ব পালন করবেন এবং প্রচলিত নিয়মে সুবিধাদি ভোগ করবেন বলে রেজিস্ট্রারের অফিস আদেশে বলা হয়েছে।

নতুন প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে আক্কাস আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ দায়িত্ব পেয়েছি। আগামীকাল যোগ দেব। হলের যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে হলের ওয়ার্ডেন, আবাসিক শিক্ষক সবার সঙ্গে আলোচনা করব। ছাত্রীদের ১৩ দফা দাবি আছে, তাঁদের সব দাবি যৌক্তিক বলে প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি আমাকে জানিয়েছেন। ছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য যা যা দরকার সবকিছু করার চেষ্টা করব।’

এদিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নুরুল আলম বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বেলা পৌনে একটায় নতুন প্রশাসনিক ভবনের উপাচার্যের কক্ষে গিয়ে এ স্মারকলিপি দিয়ে আসেন তাঁরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে তিন দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো, পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভির আওতায় আনা ও কার্যকরভাবে মনিটরিং করা, হলগুলোতে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ ও বিচরণ বন্ধ করা। তাদের দাবিগুলো আগামী তিন দিনের মধ্যে দৃশ্যমান না হলে আবারও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।

স্মারকলিপি গ্রহণ করে দ্রুত দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপাচার্য নুরুল আলম বলেন, হলের শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তিনি গতকালই হলের প্রাধ্যক্ষদের নির্দেশ দিয়েছেন। ছাত্রীদের হলের পেছনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি হলের পাশের গাছগুলো কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। সব দাবির বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান উপাচার্য।