সিলেটে বিএনপির পৌনে ৪০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করে নতুন দুটি মামলা

সিলেট জেলার মানচিত্র

সিলেটে বিএনপির পৌনে ৪০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করে নতুন দুটি মামলা হয়েছে। এর একটি মামলা হয়েছে ওসমানীনগর থানায়, অপর মামলাটি হয়েছে বিয়ানীবাজার থানায়। এই দুই মামলায় ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে ৬ নভেম্বরের পর থেকে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হলো।

ওসমানীনগরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় সোয়া ৩০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। এ ছাড়া গতকাল সন্ধ্যায় বিয়ানীবাজার উপজেলায় বিএনপির অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ নেতা-কর্মীকে আসামি করে আরেকটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলার তথ্য আজ বুধবার বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে জানাজানি হয়।

আরও পড়ুন

ওসমানীনগরের মামলায় বিএনপির ‘নিখোঁজ’ সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসীনা রুশদীর লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি থেকে গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশের হাতে আটক হওয়া তিনজনের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁরা হলেন উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সল আহমদ ও ছাত্রদল নেতা নুরুল ইসলাম।

এ দুটি মামলা পুরোপুরি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে। গণসমাবেশের আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানি করতেই এ মামলা করা হয়েছে। তবে এসব মামলা-হামলা উপেক্ষা করে গণসমাবেশে মানুষের ঢল নামবে।
আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সভাপতি, সিলেট জেলা বিএনপি

ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাঈন উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, মামলায় ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৪ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ নেতা-কর্মীকেও আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে দয়ামীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস টি এম ফখর উদ্দিন ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ মিসবাহ রয়েছেন।

আরও পড়ুন

এ মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, যুবলীগ নেতা রিপন জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোয়ালাবাজার এলাকার একটি রেস্তোরাঁর সামনে আরও কিছু বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় বাজারের দক্ষিণ অংশ থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও লোহার রড নিয়ে হঠাৎ রিপন ও তাঁর বন্ধুদের ওপর হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীদের মারপিটে রিপন আহত হন।

তবে ওসমানীনগরের স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে গতকাল বেলা চারটার দিকে লিফলেট বিতরণকালে তাহসীনা রুশদীর গাড়িতে স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার দয়ামীর বাজারে লিফলেট বিতরণ করতে যান তাহসীনা। সেখানে লিফলেট বিতরণকালে পুলিশ ছাত্রদল নেতা ফয়সল ও নুরুলকে আটক করে।

আরও পড়ুন

এদিকে বিয়ানীবাজারে গতকাল সন্ধ্যায় আবদুল হাফিজ নামের এক গ্যারেজের স্বত্বাধিকারী বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেছেন। এ মামলায় বিএনপির অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি হিল্লোল রায়। হাফিজ স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে পরিচিত। মামলার এজাহারে বলা হয়, বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে গতকাল বিকেলে তাঁর গ্যারেজে হামলা চালিয়েছেন। এ সময় তাঁরা একটি গাড়িও ভাঙচুর করেছেন। তবে বিয়ানীবাজারের বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে গতকাল বেলা পৌনে তিনটার দিকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা করেছেন।

গতকাল রাতেই দুলাল (৪০) নামে এক বিএনপি কর্মীকে আটক করে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে বিয়ানীবাজার থানা–পুলিশ।

দুটি নতুন মামলার বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এ দুটি মামলা পুরোপুরি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে। গণসমাবেশের আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানি করতেই এ মামলা করা হয়েছে। তবে এসব মামলা-হামলা উপেক্ষা করে গণসমাবেশে মানুষের ঢল নামবে।