উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আরেক রোহিঙ্গা তরুণের মৃত্যু

রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজারের উখিয়ার জামতলী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-১৫) সন্ত্রাসীদের গুলিতে দিল মোহাম্মদ (২৮) নামের এক রোহিঙ্গা তরুণের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের ই-১২ ব্লকের বাসিন্দা আবুল হাশিমের ছেলে।

শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পূর্বশত্রুতার জের ধরে সন্ধ্যায় আশ্রয়শিবিরের বসতবাড়ি থেকে ১২-১৪ জনের একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দিল মোহাম্মদকে তুলে নিয়ে ই-১২ ব্লকের রোহিঙ্গা শফি আলমের ঘরের সামনে নিয়ে গুলি করে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গুলিটি দিল মোহাম্মদের মাথায় লাগে।  

আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা সৈয়দ আহমদ বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে দিল মোহাম্মদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয় রোহিঙ্গারা তাঁকে উদ্ধার করে আশ্রয়শিবিরের এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। চলতি ডিসেম্বরে একাধিক গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় ছয়জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সন্ত্রাসীরা দিল মোহাম্মদকে তুলে এনে রোহিঙ্গা শফি আলমের ঘরের সামনে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ দিল মোহাম্মদকে পার্শ্ববর্তী এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আশ্রয়শিবিরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে সেখানে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, গত ২৮ ডিসেম্বর উখিয়ার জামতলী, বালুখালী ও মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-১৫) মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর পৃথক গোলাগুলির ঘটনায় তিন রোহিঙ্গা ওমর মিয়া ( ৩৫), মো. আবদুল্লাহ (২৩) ও রোহিঙ্গা মাঝি নাজির হোসেনের (৩৯) মৃত্যু হয়। ৬ ডিসেম্বর রাতে উখিয়ায় জামতলী আশ্রয়শিবিরে আরসা ও আরএসওর মধ্যে গোলাগুলিতে আবুল কাসেম (৩৫), মো. জোবায়ের (১৬) ও জয়নাল উদ্দিন (২৭) নামের আরও তিন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ মাসে আশ্রয়শিবিরে ৬৫টি সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৭৯ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ২২ আরসার সদস্য, ৬ জন আরএসওর সদস্য, একজন স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।

বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। গত ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।