উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে সশস্ত্র দুই গোষ্ঠীর গোলাগুলি, রোহিঙ্গা যুবক নিহত

রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-১০) সশস্ত্র দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলির সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে বশির উল্লাহ (৩৫) নামের এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটায় আশ্রয়শিবিরের এইচ-৩২ ব্লকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বশির উল্লাহ ওই আশ্রয়শিবিরের এইচ-৩২ ব্লকের বাসিন্দা ফয়েজু মিয়ার ছেলে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সঙ্গে আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে এ সংঘর্ষ হয় বলে জানিয়েছেন আশ্রয়শিবিরের লোকজন।

রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা (মাঝি) আবদুল করিম বলেন, মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১০) এইচ-৩২ ব্লকের একটি দোকানের সামনে আরসার ১০-১৫ জন অস্ত্রধারী কয়েক রোহিঙ্গা নেতাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। খবর পেয়ে আরএসওর ১৫-১৬ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আরসার সদস্যরা গুলি করেন। সঙ্গে সঙ্গে আরএসওর সদস্যরাও গুলি ছুড়তে থাকেন। থেমে থেমে ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলি চলে। এ সময় বশির উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হন।

আরও পড়ুন

সকাল ছয়টার দিকে গোলাগুলি থেমে গেলে স্থানীয় রোহিঙ্গারা বশির উল্লাহকে উদ্ধার করে আশ্রয়শিবিরের আইএমও হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি ঘটলে সকাল আটটার দিকে তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আশ্রয়শিবির থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বশির উল্লাহ মারা যান।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আজ ভোরে আশ্রয়শিবিরে মিয়ানমারের দুই ‘সন্ত্রাসী গ্রুপের’ মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় বশির উল্লাহর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালানো হচ্ছে।

থানা-পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ) সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করেন মনছুর আলম (৩০) নামের আরেক রোহিঙ্গাকে। তিনি আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-ডব্লিউ) এ-সাব ব্লকের বাসিন্দা নাজির হোসেনের ছেলে। ৫ জুন রাতে উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৬) গুলিতে নিহত হন বশির আহমদ (১৯) নামের আরেক রোহিঙ্গা। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের সি-৯ ব্লকের বাসিন্দা রহমত উল্লাহর ছেলে।

আরও পড়ুন

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, গত ছয় মাসে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে একাধিক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৪৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ১১ জন আরসা সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।

আরও পড়ুন