প্রতিপক্ষ কুপিয়েছিল, সেই ছাত্রলীগ নেতার এবার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

রাজু শেখ
ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের নাজিরপুরে রাজু শেখ (২৫) নামের এক ছাত্রলীগ নেতার গলায় ফাঁস লাগানো মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার সেখমাটিয়া গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

রাজু শেখ উপজেলার সেখমাটিয়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান শেখের ছেলে। তিনি সেখমাটিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রাজু শেখের কোমরে ছুরিকাঘাত ও ডান হাতে কুপিয়েছিল প্রতিপক্ষ। দীর্ঘদিন ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা শেষে সম্প্রতি তিনি বাড়িতে ফেরেন।

আরও পড়ুন

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রাজু শেখ প্রতিদিন ভোরে ফজরের নামাজ মসজিদে পড়ার জন্য ঘর থেকে বের হন। এরপর নামাজ শেষে গ্রামের সড়কে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি শেষে ঘরে ফেরেন। আজ ভোরে রাজু শেখ ফজরের নামাজ পড়া শেষে আর ঘরে ফেরেননি। ঘরে না ফেরায় পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা তাঁকে খোঁজাখুঁজি করেন। সকাল ১০টার দিকে বাড়ির শৌচাগারের চালার রুয়ার (কাঠ) সঙ্গে দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো তাঁর লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

পূর্বশত্রুতার জের ধরে একই এলাকার হাফিজ শেখের নেতৃত্বে আমার ছেলে রাজুকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় আমি পাঁচজনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা করি। আসামি লুৎফর রহমান ও আবদুর রব কিছুদিন হাজতবাস করে। এরা আমার ছেলের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। বিভিন্ন সময় হুমকিধমকি দিছে, ওকে বাঁচতে দেবে না
সিদ্দিকুর রহমান শেখ, রাজু শেখের বাবা

রাজু শেখের চাচাতো ভাই আল আমিন শেখ বলেন, ‘সকাল ৯টার দিকে আমার চাচা সিদ্দিকুর রহমান মুঠোফোনে জানান, তিনি শ্রীরামকাঠি বাজারে গেছেন। রাজুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর আমরা খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে শৌচাগারে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই।’

আল আমিন শেখ আরও বলেন, ‘রাজুর আত্মহত্যা করার কোনো কারণ আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। দুই মাস আগে রাজুকে স্থানীয় আবদুর রব শেখ, তাঁর দুই ছেলে হাফিজ শেখ, শফিক শেখসহ কয়েক জন কুপিয়ে জখম করেছিলেন। ওই মামলার দুই আসামি কিছুদিন হাজতবাস করেন। আবদুর রব কারাগার থেকে বের হয়ে রাজুকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন।’

রাজু শেখের বাবা সিদ্দিকুর রহমান শেখ বলেন, ‘পূর্বশত্রুতার জের ধরে একই এলাকার হাফিজ শেখের নেতৃত্বে আমার ছেলে রাজুকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় আমি পাঁচজনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা করি। আসামি লুৎফর রহমান ও আবদুর রব কিছুদিন হাজতবাস করে। এরা আমার ছেলের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। বিভিন্ন সময় হুমকিধমকি দিছে, ওকে বাঁচতে দেবে না।’

নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।