মঠবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগ কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ‘নির্বাচনী সহিংসতায়’ আহত আওয়ামী লীগের কর্মী জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের (৫০) মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি সিরাজুল ফরাজীকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ভোরে পিরোজপুরের চরখালী ফেরিঘাট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম তাঁকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানান।

এর আগে গত বুধবার বিকেলে মঠবাড়িয়া উপজেলার বাদুরা গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত জাহাঙ্গীর বাদুরা গ্রামের তোতাম্বর পঞ্চায়েতের ছেলে।

আরও পড়ুন

নিহত জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন। তিনি পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শামিম শাহনেওয়াজের কর্মী ছিলেন বলে দাবি করেন প্রার্থী। ঘটনার পর জাহাঙ্গীরের স্ত্রী দাবি করেছিলেন, তাঁর স্বামী আওয়ামী লীগ করতেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী শামিম শাহনেওয়াজের সমর্থন করায় তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তবে পুলিশ সুপার বলেছেন, নির্বাচনী সহিংসতায় নয়; জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতকে প্রতিপক্ষরা কুপিয়ে জখম করে। পরে হাসপাতালে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের স্ত্রী বুলু বেগম বাদী হয়ে সিরাজুল ফরাজীকে প্রধান আসামি করে সাতজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদীর চাচাশ্বশুর সোবাহান শরীফের সঙ্গে আসামি সিরাজুল ফরাজীর বাদুরা বাজারের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সোবাহান শরীফ তাঁর চাচাশ্বশুর হওয়ায় সিরাজুল ফরাজী তাঁদের ক্ষিপ্ত ছিলেন এবং ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজছিলেন। পূর্ববিরোধের জেরে সিরাজুল ফরাজী অন্য আসামিদের নিয়ে জাহাঙ্গীরের পথরোধ করে মাথায় গুরুতর জখম করেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, বুধবার বিকেলে জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত বাড়ি থেকে স্থানীয় বাদুর বাজারে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মামলা রুজু হলে থানা ও জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা যৌথভাবে আসামি সিরাজুল ফরাজীকে গ্রেপ্তার করে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

আরও পড়ুন

এলাকাবাসী ও নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, গত বুধবার দুপুরে বাদুরা গ্রামে স্বতন্ত্র প্রার্থী রুস্তম আলী ফরাজীর (ঈগল প্রতীক) সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামিম শাহনেওয়াজের (কলার ছড়ি) সমর্থকদের ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া হয়। বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামিম শাহনেওয়াজের সমর্থক জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত বাড়ি থেকে বাদুরা বাজারে যাওয়ার পথে স্বতন্ত্র প্রার্থী রুস্তম আলী ফরাজীর সমর্থক যুবলীগ কর্মী সিরাজুল ফরাজীর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতকে কুপিয়ে জখম করা হয়।