আওয়ামী লীগ নেতাদের হুমকিতে দোকান খুলতে পারছেন না ৪ বিএনপি–সমর্থক

বরিশাল জেলার মানচিত্র

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের ‘শরীফাবাদ মিনি বাজারে’ নিজেদের দোকান খুলতে পারছেন না চারজন বিএনপি–সমর্থক। গত রোববার রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এসে দোকান চারটি বন্ধ করে দিয়ে যান বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। এরপর গতকাল সোমবার তানভির আকন নামের এক ব্যবসায়ী দোকান খুলতে গেলে বেশ কিছু মালামাল খালে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী দোকানমালিকেরা বলেন, শরীফাবাদ গ্রামের হাওলাদারবাড়ির সেতুর কাছে গ্রামবাসীর কেনাকাটার জন্য কয়েকটি দোকানঘর রয়েছে। সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেচাকেনা করেন কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। গ্রামবাসী বাজারটির নাম দিয়েছেন ‘শরীফাবাদ মিনি বাজার’। রোববার রাত ৮টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা এসে গালিগালাজ করে তানভির আকন (২১), মো. মকবুল মৃধা (৪৫), মো. মজিবর মৃধা (৫০) ও রাশেদ মৃধার (২২) দোকান বন্ধ করে দেন। ‘অনুমতি ছাড়া দোকান খুললে খবর আছে’ বলে হুমকি দিয়ে চলে যান।

চায়ের দোকানদার তানভির আকন বলেন, মাহিলাড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সদস্য আদম আলী (৫০) ও আনিস কবিরাজের (৪৭) নেতৃত্বে ১২ থেকে ১৫ জন এসে দোকান বন্ধ করতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। গতকাল সকালে দোকান খুললে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা এসে দোকানের আংশিক মালামাল তছনছ করে খালে ফেলে দেন।

আরেক দোকানমালিক মকবুল মৃধা অভিযোগ করেন, তিনি দোকান বন্ধ করে দেওয়ার কারণ জানতে চেয়েছিলেন। নেতারা বলেছেন, তাঁর ভাতিজা রাজু মৃধা (৩০) বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা করে। সেই অপরাধে দোকান বন্ধ থাকবে। মকবুল বলেন, ছয় সন্তানসহ তাঁর আটজনের পরিবার। চা বিক্রি করে পেট চালান। দোকান বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। দোকানদার রাশেদ মৃধা বলেন, ‘আমার আত্মীয়স্বজন বিএনপি করে। তাই আমার দোকান বন্ধ করেছে।’

আরও পড়ুন

অভিযোগের ব্যাপারে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সদস্য আনিস কবিরাজ বলেন, তিনি কোনো দোকানঘর বন্ধ করেননি। শুনেছেন, আদম আলী তাঁর লোকজন নিয়ে দোকান বন্ধ করেছে। এ প্রসঙ্গে আদম আলী বলেন, ‘এসব দোকানে বিভিন্ন খারাপ লোকজন আড্ডা দেয়। তাই বাইরের লোকজন এসে হামলা করতে পারে। বিষয়টি দোকানদারদের জানালে তারা নিজ থেকেই দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে গেছে। আমি কোনো দোকান বন্ধ করিনি।’

মাহিলাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম মৃধা বলেন, ‘আমার বাড়ির কাছে বাজার। আমার কাছে ওই ধরনের কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি কেউ। খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেব।’

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি।

আরও পড়ুন