‘এবার ঘাটে কষ্ট হয়নি, সরাসরি লঞ্চে উঠে পড়েছি’

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। আজ সোমবার সকালে ঘাট এলাকায়ছবি: আব্দুল মোমিন

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে আজ সোমবার সকাল থেকে ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন কর্মস্থল থেকে তাঁরা গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন। এ কারণে লঞ্চে যাত্রীদের বেশ ভিড় দেখা গেছে। তবে ফেরিঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল স্বাভাবিক সময়ের মতোই। ভোগান্তি ছাড়াই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ পারাপার হচ্ছেন যাত্রী ও যানবাহনের শ্রমিকেরা।

আজ সকাল আটটা থেকে সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ঘাট এলাকায় অবস্থান করে দেখা গেছে, ঢাকা ও গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে লোকাল বাসে করে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীরা পাটুরিয়া ঘটে আসছেন। লঞ্চঘাট থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে পুরোনো ট্রাক টার্মিনালে এই যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে লোকাল বাসগুলো। এরপর সেখান থেকে যাত্রীরা হেঁটে মালামাল নিয়ে পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে যাচ্ছেন। পরে টিকিট সংগ্রহ করে লঞ্চে গিয়ে উঠছেন যাত্রীরা। আবার যাত্রীদের কেউ কেউ ইজিবাইক, রিকশায় করে ফেরিঘাটে যাচ্ছেন। এরপর ফেরিতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ পারাপার হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া থামাতে নৌপুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে কাজ করছিলেন।

আরও পড়ুন

ময়মনসিংহের একটি সিরামিক কারখানার কর্মী কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নিয়ামতবাড়ি গ্রামের আলিফ হোসেন (৪০) আজ সকালে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে পাটুরিয়া লঞ্চঘাট হয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন। সকাল নয়টার দিকে লঞ্চঘাটে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামের বাড়িতে মা-বাবা ও এলাকায় আত্মীয়স্বজন থাকেন। তাঁদের ছাড়া কি ঈদের আনন্দ হয়! তাই বাড়িতে যাচ্ছি ঈদ করতে। এবার ঘাটে এসে কষ্ট হয়নি, সরাসরি লঞ্চে উঠে পড়েছি।’

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাগলী গ্রামের আসলাম হোসেন আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তিনিও স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পাটুরিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় কথা হলে তিনি বলেন, ‘বছরে একবারই ঈদ করতে বাড়ি যাই। মা-বাবা, ভাইবোন ও আত্মীয়স্বজন—সবার সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়। এবার এই ঘাটে আসতে রাস্তায় (ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক) কোনো হয়রানি হতে হয়নি।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঈদযাত্রায় এবার পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ২০টি লঞ্চ এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ১২টি লঞ্চে যাত্রীদের পারাপার করা হচ্ছে। এ নৌপথে এমভি (বড়) এবং এমএল (ছোট) লঞ্চ রয়েছে। বড় লঞ্চে ১৮০ জন এবং ছোট লঞ্চে ১২০ জন পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করা যায়।

বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের বন্দর কর্মকর্তা মো. সাজাদুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করতে লঞ্চের মাস্টার ও সুকানিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে রাতেও লঞ্চ চলাচল করতে পারবে।