বগুড়ায় বখাটের ছুরিকাঘাতে দুই নারী নিহতের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১
বগুড়ায় বাড়িতে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে জখম এবং তার ভাবি ও দাদিকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়া সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত হাবিবা রিয়ার (২০) স্বামী পারভেজ হোসেন।
ওই ঘটনায় আহত স্কুলছাত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ওই স্কুলছাত্রী প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটান সৈকত আহমেদ (১৮) নামের এক তরুণ।
মামলায় একমাত্র আসামি হিসেবে সৈকত আহমেদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি ইসলামপুর হরিগাড়ি এলাকার সোহেল উদ্দিনের ছেলে ও একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি সৈকত বাদীর কিশোরী বোনকে প্রেম নিবেদন ও কুপ্রস্তাব দিয়ে পথেঘাটে উত্ত্যক্ত করতেন। সৈকতসহ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। গত বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে সৈকত বাদীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর ছোট বোন, স্ত্রী ও দাদির সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র বের করে হত্যার হুমকি দেন। এ সময় বাদীর স্ত্রী হাবিবা শ্বশুরকে ফোন করে বাড়িতে আসতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে প্রথমে হাবিবাকে জখম করেন সৈকত। এ সময় ওই কিশোরী বাধা দিতে গেলে তাকেও এলোপাতাড়ি ছুরিকাহত করা হয়। প্রাণ বাঁচাতে হাবিবা পাঁচ মাসের মেয়েকে নিয়ে দৌড়ে দাদির ঘরে আশ্রয় নেন। সৈকত সেখানেও চড়াও হয়। এ সময় ওই ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাদীর দাদি লাইলী বেগমকে গলা কেটে ও কুপিয়ে জখম করেন সৈকত। একপর্যায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় স্কুলছাত্রী দৌড়ে বাড়ির বাইরে রাস্তার ওপর গিয়ে লোকজনের সামনে সংজ্ঞা হারায়। পরে তিনজনকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে হাবিবা ও লাইলীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। গুরুতর আহত হয়ে ওই কিশোরী একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সংজ্ঞা ফিরলে সে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে জবানবন্দি দেয়।
সৈকতকে ওই মামলার গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে জানিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বগুড়া সদর থানার উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমান বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরপরই সৈকতকে বগুড়া শহর থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ। তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আজ তাঁকে বগুড়ার আদালতে পাঠানো হয়েছে।