হামলার অভিযোগে পূর্বধলা ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বহিষ্কার

প্রতিপক্ষের হামলায় আহত নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রনি বেপারী
ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানোর সময় নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলাইমান হোসেনসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় দুই নেতাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আওয়াল ও সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহম্মেদ খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংগঠন থেকে বহিষ্কার হওয়া নেতারা হলেন পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জাহিদুল আলম ও পূর্বধলা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি হৃদয় খান।

আরও পড়ুন

নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহম্মেদ খান বলেন, স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলাইমানসহ কয়েকজনের ওপর হামলার অভিযোগে জাহিদুল ও হৃদয় খানকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকায় তাঁদের কেন স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেওয়া হবে না, তা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগ বরাবর সশরীর হাজির হয়ে লিখিত বক্তব্য প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে জরুরি সভা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান সোবায়েল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে দুই ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ হোসেনের অনুসারী। অপর পক্ষে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়ারেসাত হোসেনের অনুসারী। জাতীয় দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে উভয় পক্ষ পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছে। আগেও একাধিকবার হামলা-মামলার মতো ঘটনায় জড়িয়েছে দুটি পক্ষ। অবশ্য ওয়ারেসাত হোসেন বছরখানেক ধরে অসুস্থ থাকায় এলাকায় আসেন না। নির্বাচনে আহমেদ হোসেন জয়লাভের পর থেকে তাঁর অনুসারীরাই একচ্ছত্রভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে ওয়ারেসাতের অনুসারী ছাত্রলীগের সভাপতি সোলাইমানের নেতৃত্বে ২৫ জনের মতো নেতা-কর্মী শহীদ বেদিতে ফুল দিতে যান। এ সময় আহমেদ হোসেনের অনুসারী জাহিদুল আলম, হৃদয় খানের নেতৃত্বে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। এতে প্রতিপক্ষের চারজন আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রনি ব্যাপারীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সোলাইমান হোসেন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে স্লোগানসহকারে নামার সময় উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই জাহিদুল, সাব্বিরসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।’

অভিযোগের বিষয়ে জাহিদুল বলেন, ‘হামলার ঘটনায় আমরা জড়িত না। আমাদের ওপর মিথ্যা দোষ করা হচ্ছে।’

পূর্বধলা থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।