কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাসিবুর হত্যার বিচার দাবিতে আমরণ অনশনের ডাক

সাংবাদিক হাসিবুর রহমান হত্যার বিচারের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেন সাংবাদিক নেতারা। সোমবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের একটি রেস্তোরাঁয়
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাসিবুর রহমান ওরফে রুবেলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে এবার আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকেরা। সোমবার রাত ১০টার দিকে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় জেলার সর্বস্তরের সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনা সভা শেষে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়—আগামী বুধবার বেলা ১১টায় নিজ নিজ সাংবাদিক সংগঠনের ব্যানারে একটি মৌন মিছিল বের করা হবে। মিছিলটি শহরের থানা ট্রাফিক মোড় থেকে শুরু হয়ে মজমপুর গেটে গিয়ে শেষ হবে। এ ছাড়া আগামী রোববার সকাল ১১টা থেকে কুষ্টিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে হাসিবুর হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আমরণ অনশনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

সভায় উপস্থিত সর্বস্তরের সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি সফল করতে সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে ব্যানারসহ উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এডিটরস ফোরাম কুষ্টিয়ার সভাপতি মজিবুল শেখ, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূরুন্নবী বাবু, সহসভাপতি গোলাম মওলা, কোষাধ্যক্ষ লিটন উজ জামান, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ওরফে বাচ্চু, সাংবাদিক অধিকার ফোরাম কুষ্টিয়ার সভাপতি ও এডিটরস ফোরাম কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক নুর আলম ওরফে দুলাল, সাংবাদিক নেতা সোহেল রানা, মীর আরিফিন ওরফে বাবু, মিলন উল্ল্যাহ, শরীফ বিশ্বাস প্রমুখ।

এর আগে আজ দুপুরে হাসিবুর রহমান হত্যার ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেন কুষ্টিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকেরা। এ হত্যাকাণ্ডের ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রকৃত খুনিদের ধরতে না পারায় এ মন্তব্য করেন তাঁরা। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া শহরের পাঁচরাস্তার মোড়ে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিকেরা এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন

সমাবেশে সাংবাদিক শরীফ বিশ্বাস বলেন, ‘প্রশাসনের উদাসীনতা ও সদিচ্ছার অভাবে হাসিবুর হত্যার রহস্য উদ্ঘাটিত হচ্ছে না। তাঁদের ভূমিকা রহস্যজনক মনে হচ্ছে। আমরা কোনো জজ মিয়া নাটক দেখতে চাই না।’

উল্লেখ্য, ৩ জুলাই রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের সিঙ্গার মোড়ে পত্রিকা অফিসে ছিলেন হাসিবুর। তখন মুঠোফোনে একটি কল পেয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তাঁর মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তাঁর পরিবার।

আরও পড়ুন

এর চার দিন পর ৭ জুলাই দুপুরে কুমারখালী পৌরসভার তেবাড়িয়া এলাকায় গড়াই নদের নির্মাণাধীন গোলাম কিবরিয়া সেতুর নিচ থেকে হাসিবুরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৮ জুলাই রাতে হাসিবুর রহমানের চাচা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে কুমারখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

নিহত হাসিবুর কুষ্টিয়া জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি ঠিকাদারি করতেন। হাসিবুর কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ ব্লক এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।