নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে তালা, কর্মচারীরা অবরুদ্ধ

নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ২০ দফা দাবিতে মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে। বেলা সাড়ে বারোটায়
ছবি: প্রথম আলো

শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক সুবিধা নিশ্চিতকরণসহ ২০ দফা দাবিতে নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে সকাল থেকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথমে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। সকাল নয়টা থেকে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ সমাবেশ ও ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চলছে।

আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কলেজের হোস্টেল ও ডাইনিংয়ে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক পাখা, লাইট, চেয়ার, টেবিলের সংকট রয়েছে। এ ছাড়া হোস্টেলে পানির মোটর ও ট্যাংকও নষ্ট থাকে, পানির সমস্যা হয়। কর্মচারীদের অনিয়মিত উপস্থিতি ও দায়িত্বহীন আচরণের কারণে প্রায় সময় পড়াশোনা ব্যাহত হয়। হোস্টেলের চারপাশ অপরিষ্কার। গ্রন্থাগারে পড়ার কোনো পরিবেশ নেই। গ্রন্থাগারিক হিসেবে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি কখনোই কার্যালয়ে আসেন না। এ ছাড়া গ্রন্থাগারে পর্যাপ্ত বই নেই। রয়েছে বৈদ্যুতিক পাখা ও লাইটের স্বল্পতা। শৌচাগারে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, এসব সমস্যার সমাধানের জন্য অসংখ্যবার কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিলেও তারা কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা (শিক্ষার্থীরা) প্রথমে ছয় দফা এবং পরে ২০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।

পঞ্চম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, কলেজের প্রায় ৩৫০ ছাত্রছাত্রী ক্লাস বর্জন করে এ আন্দোলন শুরু করেন। একই সঙ্গে সকাল থেকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাঁদের দাবিগুলো অবিলম্বে মেনে নিতে হবে। কর্তৃপক্ষ যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে। দাবি মেনে নিয়ে কাজ শুরু না করলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি যৌক্তিক। তাঁরা এর আগেও এসব দাবি নিয়ে আলোচনা তুলেছিলেন। কিন্তু তাঁদের দাবিগুলো বরাবরই চাপা পড়ে গেছে। মেডিকেল কলেজটিতে চতুর্থ শ্রেণির স্থায়ী কর্মচারী না থাকা একটি বড় সমস্যা। স্থানীয়ভাবে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া কর্মচারীরা বেশির ভাগই স্থানীয় প্রভাবশালীদের দাপট দেখিয়ে চলেন। এ কারণে তাঁদের দিয়ে ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের কাজ করানো যায় না। তাঁরা প্রায় সময় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে নানা ধান্দায় ব্যস্ত থাকেন।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ আবদুস সালাম বলেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে এসেছেন। দাবিগুলো তিনি দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। আলোচনা করে সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।