বাউফলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় দুই দিনেও গ্রেপ্তার নেই

পুলিশের সামনে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা হাতে বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলাকারীদের কয়েকজন। শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদের ফটকে
ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে কুপিয়ে আহত হওয়ার ঘটনায় দুই দিনেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। সংঘর্ষের সময় সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশ আহত হওয়ার ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে মামলা হলেও উপজেলা চেয়ারম্যানের ওপর হামলার ঘটনায় আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচি ঘিরে শুক্রবার বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেবের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। এ সময় আ স ম ফিরোজের উপস্থিতিতে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মিছিলকারীরা আবদুল মোতালেবকে কুপিয়ে জখম করেন।

সংঘর্ষের সময়কার একটি ছবিতে দেখা যায়, বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুনের সামনেই ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা হাতে মহড়া দিচ্ছেন তিনজন। তাঁদের একজন ছাত্রলীগের কর্মী সজীব দাসের (২৭) হাতে লাঠি, লাল গেঞ্জি পরা যুবলীগের কর্মী মোহাম্মদ শফি হাওলাদারের (৪৮) হাতে ধারালো অস্ত্র ও সাদা পাঞ্জাবি পরা চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এনামুল হক ওরফে আলকাচ মোল্লার (৪৭) হাতে লাঠি। তিনজনের বাড়িই উপজেলার কালাইয়া গ্রামে। তাঁদের মধ্যে এনামুল হক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ভাতিজা।

আরও পড়ুন

ধারালো অস্ত্র ও লাটিসোঁটা নিয়ে মহড়া দেওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় পাওয়া গেলেও আজ পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে যাঁরা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে সংঘর্ষের সময় ছোড়া ইটপাটকেলে কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন। এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধাদান ও পুলিশ আহত হওয়ার অভিযোগে শুক্রবার রাতে অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন বাউফল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনির হোসেন।

আরও পড়ুন

চিকিৎসক জানিয়েছেন, হামলায় আবদুল মোতালেবের ডান হাতের তৃতীয় আঙুল কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে। তাঁর বুকের ডান পাশে ও ডান হাতের কনুইয়ের ওপরের অংশে জখম রয়েছে। পা ও মাথায় আঘাত লেগেছে। তাঁকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তী সময় তাঁকে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন তাঁর মেয়ে মোসা. রেশমা।

আবদুল মোতালেবের ছেলে বগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, গতকাল তাঁর বাবার একটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আগামীকাল আরেকটি অস্ত্রোপচার হবে। এরপর তাঁরা আলোচনা করে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।