রূপগঞ্জে শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় ছয় সহপাঠীকে আসামি করে মামলা

নারায়ণগঞ্জ জেলার মানচিত্র

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তার ছয় সহপাঠীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ওই শিক্ষার্থীর বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও তিন-চারজনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় মামলার আবেদন করেন। আজ রোববার দুপুরে মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে।

বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান। তিনি বলেন, রাতে নিহত শিক্ষার্থীর বাবা একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আরও পড়ুন

নিহত শিক্ষার্থীর নাম মেহেদী হাসান (১৬)। সে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। আর মামলার এজাহারে উল্লেখ করা আসামিদের সবাই তার সহপাঠী বলে বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের সড়কে বিদ্যালয়ের দুই পক্ষের বিরোধের জেরে মেহেদী হাসান ও তার তিন বন্ধুকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ঘটনাস্থলেই মেহেদী হাসান মারা যায়। তারা সবাই ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আগামী ৩০ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষায় তাদের অংশ নেওয়ার কথা।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মেহেদী হাসান এসএসসি পরীক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিতে গতকাল সকাল ১০টায় বাসা থেকে বের হয়েছিল সে। দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ থেকে শামীম নামের এক সহপাঠী মেহেদী হাসানকে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানেই মামলার অন্য আসামিরা মেহেদী হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করে।

নিহত মেহেদী হাসান চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানার কালীপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। সে পরিবারের সঙ্গে রূপগঞ্জের বলাইখা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত। তার বাবা স্থানীয় একটি টেক্সটাইল মিলের শ্রমিক। ছেলে হত্যার বিচার দাবি করে গতকাল রাতে শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকারীরা সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তারা যেন বিচারের আওতায় আসে।

ঘটনার পর বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবদুল আওয়াল প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকারীরা একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। ওই কিশোর গ্যাংয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের বাইরের ছেলেরাও আছে।

হত্যার কারণ জানতে চাইলে পরিদর্শক আতাউর রহমান বলেন, ‘একটি মেয়েকে প্রেম নিবেদন করাকে’ কেন্দ্র করে দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এ নিয়ে গত শুক্রবার বিকেলেও দুই পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। এর জেরে এ খুন হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হত্যার আসল কারণ জানা যাবে।