নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগ, প্রার্থিতা বাতিলের দাবি

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী
ছবি: প্রথম আলো

সিলেট সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় অসত্য তথ্য দিয়েছেন দাবি করে এক ব্যক্তি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, নৌকার প্রার্থী হলফনামায় জন্মতারিখ ও শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়টি অসত্যভাবে উপস্থাপন করেছেন। এর ফলে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করা হোক।

অভিযোগকারী ওই ব্যক্তির নাম এ কে এম আবু হুরায়রা (সাজু)। তিনি সিলেট নগরের নরসিংটিলা এলাকার বাসিন্দা। গতকাল সোমবার বিকেলে সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদেরের কাছে তিনি লিখিত লিখিত অভিযোগ জমা দেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরের পর বিষয়টি জানাজানি হয়। ২১ জুন সিলেটে ভোট গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন

জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের আগে অভিযোগ পেলে তথ্য যাচাই-বাছাই করা যেত। এখন আমাদের আর কিছুই করার নেই।’

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর হলফনামায় জন্মতারিখ ১৯৭০ সালের ১ জুলাই এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ (সম্মান) উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনি ১৯৮৮ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৮৪২০৮ এবং শিক্ষাবর্ষ ১৯৮৬-১৯৮৭। রেজিস্ট্রেশন, প্রবেশপত্র ও সনদপত্র অনুযায়ী জন্মতারিখ ১৯৭২ সালের ১ জুলাই।

আরও পড়ুন

অভিযোগে আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর জন্মতারিখ পরিবর্তন করার জন্য কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড বরাবর আবেদন করেছিলেন, যা বোর্ড কর্তৃপক্ষ নামঞ্জুর করে। এ ছাড়া তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে ১৯৮৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১৯৯০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই বাংলাদেশ ইয়ুথ প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাজ্যে যান এবং সেখানে পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশে কোনো প্রকার পড়াশোনা কিংবা পরীক্ষায় অংশ নেননি। এ ছাড়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পাসপোর্টের জন্মতারিখের সঙ্গে এসএসসির সনদে উল্লেখিত জন্মতারিখে গরমিল আছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুন

এ কে এম আবু হুরায়রা সাজু লিখিত অভিযোগে দাবি করেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী হলফনামায় ভুল জন্মতারিখ উল্লেখ করে এবং সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দাখিল করে নির্বাচন বিধিমালা ২০১০-এর বিধি ১৪-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন। তিনি দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ধারা ১৮১ অনুযায়ী ফৌজদারি আইনে অপরাধ করেছেন, যার সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছরের কারাদণ্ডসহ জরিমানা। লিখিত অভিযোগে হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়া এবং জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিলের পাশাপাশি ফৌজদারি আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

অভিযোগের বিষয়ে মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভুয়া ও মিথ্যা একটা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক। হলফনামায় সঠিক তথ্যই দিয়েছি।’

আরও পড়ুন