পাবনা মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগ নেতাকে হল ত্যাগে বাধ্য করতে মারপিটের অভিযোগ

পাবনা মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে তছনছ করা রাহুল কুমার দাসের কক্ষ
ছবি: সংগৃহীত

পাবনা মেডিকেল কলেজে হল ত্যাগে বাধ্য করতে এক ছাত্রলীগ নেতার কক্ষ তছনছ ও তাঁকে মারপিটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার দুপুরে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল কুমার দাস নিজের সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ বরাবর এই অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি নিজেকে নিরাপত্তাহীন দাবি করে অধ্যক্ষর কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন।

রাহুল কুমার দাস পাবনা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের (২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী। তিনি কলেজের ছাত্রবাসের বৈধ আবাসিক ছাত্র। প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু হলের নিচ তলায় হল সুপারের জন্য বরাদ্দ করা কক্ষে তিনি থাকেন।

লিখিত অভিযোগে রাহুল কুমার দাস জানান, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তিনি হলে নিজের কক্ষে ছিলেন। এ সময় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক অভিতোষ চক্রবর্তী ও সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিন্নবীর নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জন তাঁর কক্ষে প্রবেশ করেন। তাঁকে তৎক্ষণাৎ কক্ষ ত্যাগের নির্দেশ দেন। তিনি বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানোর কথা বললে তাঁরা তখন তাঁর (রাহুল) ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে কক্ষের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও তছনছ করেন। তিনি বাধা দিতে গেলে তাঁকে মারপিট করেন ওই নেতা-কর্মীরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাহুল কুমার দাস নিজের নিরাপত্তা ও হলে বসবাসের সুষ্ঠু পরিবেশ দাবি করেন।

রাহুল কুমার দাস লিখিত অভিযোগে জানান, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন আল-তামিমের নির্দেশে তাঁর কক্ষে ছাত্রলীগের নেতারা এই তাণ্ডব চালিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই তিনি নিজের নিরাপত্তা ও হলে বসবাসের সুষ্ঠু পরিবেশ দাবি করেন।

যোগাযোগ করা হলে রাহুল কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর পরীক্ষা চলছে। গতকাল শুক্রবার পরীক্ষা দিয়েছেন। ফলে বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানাতে দেরি হয়েছে। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিকে বিষয়টি জানিয়েছেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন তিনি।

পাবনা মেডিকেল কলেজ
ছবি: সংগৃহীত

এদিকে পাবনা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক অভিতোষ চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে ঘটনা কী ঘটেছিল, তা তিনি বলতে চাননি।

তবে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ আহম্মেদ বলেন, ‘এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ওরা ব্যাচমেট (অভিতোষ ও রাহুল)। যতটুকু জেনেছি, দুজনের মধ্যে ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নিয়ে কথা–কাটাকাটি হয়েছে। হামলা, ভাঙচুর বা মারধরের মতো কিছু ঘটেনি। এ ঘটনায় আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে উভয় পক্ষই যেহেতু আমাদের সংগঠনের, তাই কলেজ প্রশাসন ও সিনিয়র নেতাদের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করা হবে।’

কলেজের অধ্যক্ষ উবায়দুল্লাহ ইবনে আলী বলেন, ‘নতুন শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কাউকে হল বা কক্ষ থেকে বের করে দিতে কোনো শিক্ষার্থী বা ছাত্রনেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। হল–সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানে হল সুপাররা রয়েছেন। এখানে অন্য কারওর হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। ঘটনায় আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’