কলাপাড়ায় বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শ্রমিক লীগের বিক্ষোভ

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাঁচজন কর্মী প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর জখম হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে কলাপাড়া পৌর শহরে সমাবেশ হয়
ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদারের পাঁচ সমর্থকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মিছিল ও সভা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কলাপাড়া উপজেলা শ্রমিক লীগের উদ্যোগে পৌর শহরের মনোহরপট্টিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

এ সময় বক্তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান। বিকেল চারটার দিকে শহরের কুমারপট্টি এলাকার উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে মনোহরপট্টিতে উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি হীরা হাওলাদারের সভাপতিত্বে এক সভা হয়।

সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শহীদুল ইসলাম বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম সরদার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়ামীন আহম্মেদ প্রমুখ।

এর আগে গতকাল বুধবার রাত নয়টার সময় কলাপাড়া পৌর শহরের চৌরাস্তা এলাকায় বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের অভিযোগ, পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ আখতারুজ্জামানের ছেলে ও সমর্থকেরা এ হামলা চালায়।

থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যার পর বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল মোতালেব তালুকদারের এতিমখানা সড়ক এলাকার বাসভবন থেকে তাঁর কয়েকজন সমর্থক বাড়িতে ফিরছিলেন। কলাপাড়া পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন চৌরাস্তা এলাকার খান আবাসিক হোটেলের সামনে পৌঁছালে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ আখতারুজ্জামানের ছেলে ও টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমানের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মোকসেদ (৪৪), সাইমুন ইসলাম (২২), সাকিব (১৫), বাইজিদ (২০) ও নজরুল আকন (৩৪) গুরুতর আহত হন।

পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। তবে মোকসেদ, সাইমুন আর নজরুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার রাতেই বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তাঁদের তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। আর সাকিব ও বাইজিদকে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম সরদার বলেন, আহত ব্যক্তিরা শ্রমিক লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা উপজেলা নির্বাচনে আবদুল মোতালেব তালুকদারের সমর্থক হিসেবে কাজ করেছেন। প্রতিপক্ষ দোয়াত-কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ আখতারুজ্জামানের কর্মীদের হামলায় তাঁরা গুরুতর আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থক মোকসেদের নেতৃত্বে প্রথম আমার সমর্থকদের ওপর হামলা হয়। এতে আমার সমর্থক রাসেল গুরুতর আহত হয়। সে এখন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। আমার আরও দুই-তিনজন সমর্থককে মারধর করা হয়েছে। বিজয়ী চেয়ারম্যানের সমর্থকেরা এ জন্য দায়ী। ...এ ঘটনায় আমার ছেলেকে জড়ানো হয়েছে। যখন এ ঘটনা ঘটে, তখন আমার ছেলে বাসায় ছিল। আমি নিজে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করি না।’

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই আইনের আওতায় নেওয়া হবে।