সন্তান হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে মায়ের জবানবন্দি

কিশোরগঞ্জ জেলার ম্যাপ

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শিশুসন্তান হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার তৃষা বেগম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন কিশোরগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কিশোর দত্ত। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এই তথ্য জানান।

তৃষা বেগম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উসমান গণির দ্বিতীয় স্ত্রী। তৃষার দেড় বছর বয়সী আরও একটি সন্তান রয়েছে। গতকাল সকালে সাত দিনের নবজাতককে হত্যার অভিযোগে তৃষা বেগমকে আসামি করে ভৈরব থানায় মামলা করেন তাঁর স্বামী উসমান গণি।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, এত দ্রুত আরেকটি বাচ্চা নিতে আগ্রহী ছিলেন না তৃষা। ১৭ জুন রাত ৩টার দিকে তাঁর মধ্যে শিশুটিকে মেরে ফেলার ভাবনা আসে। তখন মনে হয় শিশুটি থাকলে তাঁর পক্ষে এত চাপ সামলানো সম্ভব হবে না। নিজেও প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেন না। প্রতিষ্ঠিত হওয়া ও চাপমুক্ত জীবন পেতে একজনকে সরানোর বিকল্প ছিল না বলেই তিনি এই পথ বেছে নেন। তিনটার কিছু সময় পর ঘুমন্ত শিশুটিকে কোলে নিয়ে ঘরের একটি জানালার কাছে যান এবং গ্রিলের ফাঁক দিয়ে ঠেলে বাইরে নিয়ে ছেড়ে দেন।

আরও পড়ুন

পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানান, উসমান গণির বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায়। সাড়ে তিন বছর আগে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তৃষার বাড়ি কুলিয়ারচরের ছয়সূতী গ্রামে। প্রথম স্ত্রী ঢাকায় থাকেন। তৃষা থাকেন ভৈরব পৌর শহরের নিউটাউন এলাকার একটি ভবনের দশম তলায়। উসমান গণি সপ্তাহে শুক্রবার ভৈরবের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখেন। ভৈরবের বাসায় তৃষার সঙ্গে থাকেন দুজন কাজের মেয়ে ও তৃষার এক বান্ধবী। ১৭ জুন দিবাগত রাত ৪টার দিকে বিছানায় সন্তান নেই জানিয়ে তৃষা কান্নাকাটি শুরু করেন। সকালে ভবনের পেছনে কিছুটা ঝোপের মতো জায়গা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেন তৃষা। পরে তৃষাকে আসামি করে থানায় মামলা করেন তাঁর স্বামী।

আরও পড়ুন

মামলাটির তদন্ত করছেন ভৈরব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজহারুল হক। তিনি বলেন, এই মামলার একজনই আসামি। তিনি গ্রেপ্তার আছেন এবং আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ায় মামলার রহস্যও উন্মোচন হয়ে গেল।