ঘুম থেকে জেগে মা দেখেন, নবজাতক সন্তান পাশে নেই, ঝোপে মিলল মরদেহ

ভৈরবে সাত দিন বয়সী এক নবজাতকের মরদেহ পাওয়া গেছে বাসার পেছনে এই ঝোপের মধ্যে
ছবি: সংগৃহীত

সাত দিন বয়সী নবজাতক সন্তানকে পাশে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা তৃষা বেগম। ভোর চারটায় তাঁর ঘুম ভাঙে। ওই সময় দেখতে পান, বিছানায় তাঁর সন্তান নেই। স্বামী ঘুমিয়ে ছিলেন অন্য কক্ষে। স্বামীর কাছেও সন্তানকে না পেয়ে যান গৃহকর্মীদের শোবার ঘরে। সেখানেও নেই সন্তান। আহাজারি শুরু করলে ঘরের অন্যরা ঘুম থেকে জাগেন। কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে সকাল ৯টার দিকে শিশুটির সন্ধান মেলে বাড়ির পাশে ঝোপের মধ্যে। তবে জীবিত নয়, মৃত অবস্থায়।

রাতের আঁধারে ঘর থেকে নিয়ে গিয়ে সাত দিন বয়সী নবজাতককে মেরে ফেলার এ ঘটনা ঘটেছে আজ মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের নিউ টাউন এলাকায়।

আরও পড়ুন

পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানান, শিশুটির বাবা উসমান গণি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তাঁর বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায়। তিনি দুই বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী একজন চিকিৎসক, তিনি ঢাকায় থাকেন। সাড়ে তিন বছর আগে উসমান গণি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম তৃষা বেগম। তৃষার বাবার বাড়ি কুলিয়ারচরের ছয়সূতী গ্রামে। সাত দিন আগে তৃষা একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। গণি–তৃষা দম্পতির আরও একটি সন্তান রয়েছে। সন্তানদের নিয়ে তৃষা থাকেন ভৈরব পৌর শহরের নিউটাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাটের দশম তলায়। তাঁর সঙ্গে সব সময় থাকেন দুজন গৃহকর্মী ও তৃষার এক বান্ধবী। উসমান গণি সপ্তাহে এক দিন শুক্রবার ভৈরবের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখেন। তিনি এবার ঈদ করেন দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে।

আরও পড়ুন

পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘুম থেকে তৃষা বেগম জাগার পর শিশুটিকে না পেলেও ঘরের দরজা-জানালা সব বন্ধ ছিল। সকাল ৯টার দিকে বাসার পেছনে ঝোপের মধ্যে শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তখন ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল। শিশুটির মুখে ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

তৃষা বেগম আহাজারি করে বলেন, ‘আমার পাশ থেকে কীভাবে, কারা, কোন কারণে আমার সন্তানকে নিয়ে গেল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’ তাঁর স্বামী উসমান গণিও একই মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন

এদিকে এ ঘটনার পর ওই দম্পতি এবং ওই রাতে ঘরে যাঁরা ঘুমিয়েছিলেন, প্রত্যেককে থানায় নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, খুবই স্পর্শকাতর ঘটনা। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। শিশুটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এর বেশি তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরও পড়ুন