পঞ্চগড়ে আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক, সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আন্দোলনকারীরা
পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজসহ চার বিচারকের অপসারণের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ বেঁধে দেওয়া সময়ের শেষে আদালতের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলেছে। তাঁদের বেঁধে দেওয়া ২৪ ঘণ্টা অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আগামী রোববার থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরের পর নিয়োগ–বাণিজ্য, ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম ও হুমকির অভিযোগে জেলা ও দায়রা জজসহ চার বিচারকের অপসারণের দাবিতে পঞ্চগড়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেখানে দাবি করা হয়, পঞ্চগড় আদালতের জেলা ও দায়রা জজ মো. গোলাম ফারুক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মণ্ডল, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুজ্জামান ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু হেনা সিদ্দিকী এখনো আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরের ভূমিকা পালন করছেন।
আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পঞ্চগড় জেলা জজ আদালত ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেখা যায়, নিয়মমাফিক চলছে আদালতের কার্যক্রম। বিচার কাজে গতকালের আন্দোলনের কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মণ্ডল এক দিনের (আজ বৃহস্পতিবার) ছুটিতে আছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আদম সুফি বলেন, বৃহস্পতিবার আদালত স্বাভাবিকভাবেই চলছে। অন্যদিকে জেলার চিফ জুডিশিয়াল আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা হোসনেয়ারা পারভীন বলেন, গতকালের আন্দোলনের কোনো প্রভাব আমরা আজ আদালতে দেখিনি। আদালতের সব কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে।
পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. জমিরুল ইসলাস প্রথম আলোকে বলেন, গত ২০ ডিসেম্বর পঞ্চগড়ের মকবুলার সরকারি কলেজে পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষায় উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে স্থগিত হয়েছিল। এর পরের দিনও ২১ ডিসেম্বরও একটি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সেটিও স্থগিত করেছিল নিয়োগ ও বাছাই কমিটি। পরে বিষয়টি জেনে জেলা ও দায়রা জজ ওই পরীক্ষার কমিটি বাতিল করেছেন। এ ছাড়া ৪ জানুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পরের দিন তার কার্যতক্রমও স্থগিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ।
জমিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বুধবারের আন্দোলন ঘিরে এখনো পর্যন্ত কোনো বিচারক কোনো মন্তব্য করেননি বা এর কোনো প্রভাব আদালতে দেখিনি। বৃহস্পতিবার আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে।’
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড়ের অন্যতম সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী বলেন, ‘আমরা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম (সময়সীমা) দিয়েছিলাম। সেটি আজ দুপুরে শেষ হচ্ছে। তবে আমাদের দাবির বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ আমরা দেখিনি। বৃহস্পতিবার অফিস সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। এর মধ্যে কোনো নির্দেশনা না এলে শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকায় রোববার আমরা আবারও আন্দোলনে নামব।’