ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসপি, ওসির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ

নিহত ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে গুলিতে ছাত্রদলের নেতা নয়ন মিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) আটজনের নামে মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আলম এক আদেশে এই মামলার আবেদন খারিজ করে দেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে নিহত ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়ার বাবা রহমত উল্লাহ আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে আদালতে ওই মামলার আবেদন করেন।

আরও পড়ুন

যাঁদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন হয়েছিল তাঁরা হলেন বাঞ্ছারামপুর থানার কনস্টেবল বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস (২৬), কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম (৩৩), ওসি নূরে আলম (৪১), পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে (৩২), উপপরিদর্শক (এসআই) আফজাল হোসেন খান (৩০) ও বিকিরণ চাকমা (৩২), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন রেজা ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।

এর মধ্যে মামলার ৭ নম্বর আসামি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন রেজা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের দায়িত্বে রয়েছেন। বাঞ্ছারামপুর উপজেলা তাঁর দায়িত্বরত এলাকা নয়।

মামলার আরজিতে বলা হয়, পুলিশের হামলায় আহত নেতা-কর্মীদের বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ছাত্রদলের নেতা নয়নের পেটে শটগান দিয়ে গুলি করেন ১ নম্বর আসামি কনস্টেবল বিশ্বজিৎ।

মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার বিকেল চারটার দিকে ১ থেকে ৬ নম্বর আসামি কনস্টেবল বিশ্বজিৎ ও শফিকুল, ওসি নূরে আলম, পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি, এসআই আফজাল  ও বিকিরণ চাকমা সঙ্গে ৮-১০ জন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন ও পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের নির্দেশে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যদের ওপর হামলা চালান। বিএনপির কুমিল্লার গণসমাবেশ কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীরা এ সময় লিফলেট বিলি করছিলেন। পুলিশের হামলায় আহত নেতা-কর্মীদের বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ছাত্রদলের নেতা নয়নের পেটে শটগান দিয়ে গুলি করেন ১ নম্বর আসামি কনস্টেবল বিশ্বজিৎ। নয়নকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ১০টায় মারা যান নয়ন।

আরও পড়ুন

স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নয়নকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মী জানান, ঢাকার বিএনপির আইনজীবীরা এই মামলার আরজি লিখেছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আইনজীবী জিয়াউদ্দিন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির আইনজীবী নুরুল ইসলামসহ অর্ধশতাধিক আইনজীবী রহমত উল্লাহর পক্ষে শুনানি করেন।

পুলিশের গুলিতে নয়নের মৃত্যুর ঘটনার পাঁচ দিন পর আদালতে মামলার আবেদন করল তাঁর পরিবার। এদিকে ওই দিনের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞতানামা ১০০ থেকে ১২০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।