সোনাগাজীতে ডাকাত দলের হামলায় আহত স্বর্ণ ব্যবসায়ী মারা গেছেন
ফেনীর সোনাগাজীতে বোমা ফাটিয়ে সোনার দোকানে ডাকাত দলের হামলার ঘটনায় আহত দোকানমালিক অর্জুন চন্দ্র ভাদুড়ি (৫২) মারা গেছেন। ঘটনার ১১ দিন পর গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে চট্টগ্রামের অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ভুক্তভোগী ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ অক্টোবর দুপুরে উপজেলার জমাদার বাজারে অর্জুন জুয়েলার্সের মালিক অর্জুন চন্দ্র ভাদুড়িকে কুপিয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাতের দল। এ সময় ডাকাতদের ছোড়া বোমার আঘাতে শহীদুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন পথচারী আহত হন। পর আহত অর্জুন ভাদুড়িকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে ওইদিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার দুই দিন পর আহত অর্জুন ভাদুড়ির জামাতা রনি বনিক বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সিরাজুল ইসলাম (৪৮), মো. মোস্তফা (৫০) ও বেলাল হোসেনকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের চর সাহাভিকারী এলাকার বাসিন্দা।
ভাতিজা রতন চন্দ্র ভাদুড়ি বলেন, হামলার পর তাঁর চাচা অর্জুন চন্দ্র ভাদুড়ির মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। অস্ত্রোপচার শেষে তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তবে ওই সময় তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। এতে আবার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। গতকাল বিকেলে তাঁর ডায়ালাইসিস করা হয়। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। রাত দুইটার দিকে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাগাজী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে অর্জুন ভাদুড়ির জামাতার করা মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে দুই দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনার বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য উদ্ঘাটন করা যায়নি বলে জানিয়েছেন সোনাগাজী থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খালেদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অন্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও শনাক্ত করতে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অর্জুন ভাদুড়ির মৃত্যুতে ডাকাতির মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে রূপান্তর হবে।