চট্টগ্রামে মা–মেয়েসহ তিন খুনের মামলার আসামি গৃহশিক্ষকের জামিন
চট্টগ্রাম নগরে মা ও দুই শিশুসন্তানকে বাসার ভেতর কুপিয়ে খুনের মামলার একমাত্র আসামি গৃহশিক্ষক তারেক চৌধুরী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নগরের চান্দগাঁও থানার মামলার আসামি তারেক চৌধুরীর জামিননামা কারাগারে আসার পর যাচাই–বাছাই করে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।
আদালত সূত্র জানায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। সেখানে মামলার সাক্ষ্য চলছে।
২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর নগরের খতিবের হাট এলাকার ‘মা-মনি ভিলা’ ভবনের পঞ্চম তলার বাসায় খুন হন সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ডলি আক্তার (৩০) এবং তাঁর ছেলে আলভী (৯) ও মেয়ে আদিবা পায়েল (৫)। আলভী বহদ্দারহাট সাইমন লাইট গ্রামার স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র এবং আদিবা একই স্কুলের নার্সারি শাখার শিক্ষার্থী ছিল। তারেক কুলগাঁও সিটি করপোরেশন কলেজের ছাত্র ছিলেন।
ওই হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর পুলিশ গৃহশিক্ষক তারেককে গ্রেপ্তার করে। পরে তিনি পুলিশের কাছে তিনজনকে খুনের কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে জবানবন্দিও দেন। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া পায়ের ছাপ ও তারেকের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাঁচলাইশ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) বর্তমানে ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান ২০১৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি গৃহশিক্ষক তারেককে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এতে ৪৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, মুঠোফোনের লোভে এবং টিউশনিতে বেতন কম দেওয়ার ক্ষোভ থেকে তারেক এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। হত্যকাণ্ডের বিষয়ে তারেকের দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ আছে, গৃহশিক্ষক তারেকের জন্য ডলি আক্তার খাবার আনতে নিচে গিয়েছিলেন। তখন পায়েল শৌচাগারে গিয়েছিল। তারেক শুরুতে আলভীকে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে পায়েল এলে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর ডলি নিচ থেকে ফিরলে তাঁকেও হত্যা করেন তারেক। পরে একটি লুঙ্গি পরে রক্তমাখা প্যান্ট পাল্টে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যান।
একই বছরের ৩ অক্টোবর আদালত আসামি তারেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। পরে চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে এটি বিচারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হয়ে বিচারের জন্য মামলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে বিচারের জন্য। এখন সেখানে সাক্ষ্য চলছে।