ধরপাকড় এড়াতে হোটেল-মোটেলে উঠছেন না নেতা-কর্মীরা

দূরদূরান্ত থেকে সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের জন্য সমাবেশস্থলে ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে। আজ বুধবার সকালে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে ধরপাকড় ও বিভিন্ন হয়রানি এড়াতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। কৌশলের অংশ হিসেবে দূরদূরান্ত থেকে সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীরা হোটেল-মোটেলে উঠবেন না বলে জানা যায়। বিকল্প হিসেবে তাঁরা সমাবেশস্থলে ক্যাম্প স্থাপন করে ও কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নিয়ে থাকবেন।

আগামী শনিবার সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। গণসমাবেশকে সামনে রেখে সিলেটের হোটেল-মোটেলগুলোয় নেতা-কর্মীদের ভিড় হবে বলে ধারণা করা হলেও তেমনটি হচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের প্রায় সব হোটেল-মোটেলে সমাবেশের নেতা-কর্মীদের কোনো অগ্রিম বুকিং নেই।

আরও পড়ুন

সিলেটের ছয়টি হোটেলের ব্যবস্থাপক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাধারণত সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার সকালে ওঠেন। মূলত শুক্রবারেই পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে। তবে আগামী শুক্রবার শহরের হোটেলগুলোর অধিকাংশ কক্ষ খালি পড়ে আছে। বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় অনেকে সিলেটে বেড়াতে আসার সময় পরিবর্তন করেছেন বলে ধারণা করছেন হোটেল-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আবার বিএনপির নেতা-কর্মীরাও আজ বুধবার পর্যন্ত কোনো অগ্রিম বুকিং দেননি। এতে একদিকে সমাবেশের জন্য পর্যটকেরা আসছেন না, আবার সমাবেশে যোগ দিতে আসা কর্মী-সমর্থকেরাও হোটেলে উঠছেন না। সব দিক বিবেচনায় হোটেল কর্তৃপক্ষেরই লোকসান হচ্ছে।

নগরের জিন্দাবাজার এলাকার হোটেল গোল্ডেন সিটির ব্যবস্থাপক মৃদুল কান্তি দন্ত প্রথম আলোকে বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার জন্য এমনিতেই পর্যটকদের আনাগোনা কম। শুক্রবার হোটেলে অতিথিদের বুকিং থাকলেও এবার তেমনটি নেই। আবার এই সপ্তাহে বিএনপির সমাবেশ আছে। ফলে এই সপ্তাহে ব্যবসার আশা নেই।

আজ সকাল পর্যন্ত সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সাতটি ক্যাম্প দেখা গেছে
ছবি: প্রথম আলো

সিলেট হোটেল-মোটেল-রেস্টহাউস মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুমাত নুরী বলেন, হোটেলগুলো বলতে গেলে শুক্রবার ও শনিবার ফাঁকা। এখন পর্যন্ত সে রকম কোনো বুকিং নেই।
বিএনপির একাধিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হোটেল-মোটেলগুলোয় উঠলে নাম-পরিচয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করতে হয়। আবার বিভিন্ন ধরনের হয়রানিরও আশঙ্কা থাকে। এ জন্য নেতা-কর্মী এবং সমর্থকেরা ঝামেলায় জড়াতে চান না। তাই স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশস্থলে ক্যাম্প স্থাপন করে এবং সিলেটের বেশ কয়েকটি কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নিয়ে সিলেটের বাইরে থেকে আসা নেতা-কর্মীদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া হোটেলগুলোয় উঠলে বাড়তি খরচেরও বিষয় রয়েছে।

আজ সকালে সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের রাতযাপনের জন্য শামিয়ানা টানিয়ে ক্যাম্প বানানো হচ্ছে। আজ সকাল পর্যন্ত ওই মাঠে সাতটি ক্যাম্প দেখা গেছে।

আরও পড়ুন

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সিলেটের সমাবেশে অন্তত চার লাখ মানুষের সমাগম হবে। যেভাবে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তাতে জমায়েত আরও বেশিও হতে পারে। সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হতে পারে। এই শঙ্কা থেকে নেতা-কর্মীরা নিজেদের উদ্যোগে সমাবেশস্থলে ক্যাম্প তৈরি করছেন। সেখানে তাঁরা সমাবেশের আগে থেকেই অবস্থান করবেন।