জামালপুরে মহাসড়কে অটোরিকশা বন্ধসহ ১২ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

জামালপুরের মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ। আজ বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কেছবি: প্রথম আলো

জামালপুরের মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধসহ ১২ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত মানববন্ধন এবং পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালিত হয়। এতে কলেজটির শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তাঁরা প্রথমে শহরের ফৌজদারি মোড়ে মানববন্ধন করেন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে যান। পরে সেখানে দাবি বাস্তবায়নে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে বেলা দেড়টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দপ্তরে স্মারকলিপিও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জামালপুরের বিভিন্ন মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, নছিমন-করিমন অবাধে চলাচল করছে। এসব যানবাহন গতি নিয়ন্ত্রণে অক্ষম ও নিরাপত্তাব্যবস্থা অপ্রতুল। প্রশিক্ষণবিহীন চালকের হাতে পরিচালিত হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছেন এবং পঙ্গুত্ববরণ করছে। গত সোমবার জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দিগপাইত এলাকায় কাভার্ড ভ্যান ও অটোরিকশার সংঘর্ষে আশেক মাহমুদ কলেজের দুজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। অথচ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৪৭ (২) ধারা অনুযায়ী মহাসড়কে এ ধরনের যানবাহন চলাচল আইনত নিষিদ্ধ।

আরও পড়ুন

শিক্ষার্থীদের ১২ দফা দাবির মধ্যে আছে, মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, নছিমন-করিমসহ অননুমোদিত যানবাহনের চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা; স্থানীয় প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা; ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নির্দিষ্ট গ্রামীণ ও শহরতলির রাস্তা নির্ধারণ; সড়কে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত; মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সচেতনতা কর্মসূচি ও চালকদের প্রশিক্ষণ জোরদার; তিন চাকার যানগুলোর চালকদের ৬০ ঘণ্টা ট্রেনিং ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা; তিন চাকার যানগুলোর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা; চেকপোস্ট বৃদ্ধি করা ও পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ করা অথবা প্রয়োজনে ছাত্রদের সাহায্য নেওয়া; প্রতিটি মহাসড়কে ২ জোড়া করে বিআরটিএ (লোকাল) বাস সার্ভিস চালু করা; গাড়ির ফিটনেস নিশ্চিত এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা, ওই সড়ক দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত ও নিহত পরিবারকে রাষ্ট্রীয় অনুদান নিশ্চিত করা।

এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুস সাকিব বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের বিষয়টি শুনেছি। আমি তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে যাচ্ছি। ওই দিনের সড়ক দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’