সুইজারল্যান্ডের ৩০ পর্যটক নিয়ে জাহাজটি এখন বরিশালে

বিদেশি পর্যটকবাহী জাহাজটি বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতীরে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র একটি জেটিতে নোঙ্গর করে। বুধবার দুপুরে
ছবি: সাইয়ান

সুইজারল্যান্ডের ৩০ জন পর্যটক নিয়ে আসা ভারতীয় জাহাজ ‘এম‌ভি গঙ্গা বিলাস’ বরিশালে এসেছে। মোংলা বন্দর হয়ে আজ বুধবার দুপুরে জাহাজটি কীর্তনখোলা ঘাটে নোঙর করা হয়। এ দলে সুইডেনের ২৮, জার্মানির ১ জন ও ভারতের ১ জন পর্যটক রয়েছেন।

বিআইডব্লিউটিএর পন্টুনে বিদেশি পর্যটকদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বরিশাল জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন, পুলিশ সুপার (এসপি) ওয়াহিদুল ইসলাম, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশালের বন্দর ও পরিবহন বিভাগের উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক।

বিকেলে পর্যটকদের দলটি বরিশাল নগরের কবি জীবনানন্দ দাশ সড়কে (বগুড়া রোড) অক্সফোর্ড মিশনের ১২০ বছরের পুরোনো এপিফানি গির্জা পরিদর্শন করে। তাঁরা বরিশালের আরও বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখবেন।

আরও পড়ুন

পর্যটক দলটিকে বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে নিয়ে যেতে সহায়তা দিচ্ছে ট্যুর কোম্পানি ‘জার্নি প্লাস’। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী তৌফিক রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল ত্যাগ করার কথা রয়েছে। সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জ হয়ে ঢাকায় যাবেন। এরপর ঢাকা থেকে নৌপথে টাঙ্গাইল হয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পৌঁছাবেন। চিলমারী থেকে ভারতে ফিরে যাবে দলটি।
তৌফিক রহমান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার চাইছে নদীপথে পর্যটনশিল্পের প্রসার হোক। সেই লক্ষ্যেই ‘গঙ্গা বিলাস’-এর এই যাত্রা আমাদের পথ দেখাবে।’

বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, পর্যটন জাহাজ ‘গঙ্গা বিলাস’-এর ভ্রমণ নিরাপদ রাখতে বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানের সব ধরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর পন্টুনে বিদেশি পর্যটকদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বরিশাল জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন
ছবি: সাইয়ান

বাংলাদেশ হয়ে আসাম পর্যন্ত এই বিশাল নৌপথটি পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করেন নৌ বিহারের পরিচালক রাজ সিং। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই যাত্রার মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে নদীকেন্দ্রিক পর্যটনের পথ উন্মুক্ত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। পর্যটকদের ভারত ও বাংলাদেশের শিল্প, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য জানার সুযোগ করে দেবে।’

‘জার্নি প্লাস’-এর প্রধান নির্বাহী তৌফিক রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে লং ট্যুর রিভার ক্রুজ। এটি ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দেবে। বাংলাদেশ-ভারতের ২৭টি নদী ও ৫০টি পর্যটনকেন্দ্রে যাবে।

আরও পড়ুন

উল্লেখ্য, বিলাসবহুল গঙ্গা বিলাস ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসি থেকে গত ১৩ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে। সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চ্যুয়ালি গঙ্গা বিলাসের যাত্রা উদ্বোধন করেন। ১৯৭২ সালের প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের (পিআইডব্লিউটিটি) অধীনে বাংলাদেশ-ভারত নৌপথে বাণিজ্য শুরু হয়েছিল, যা এখনো কার্যকর র‌য়ে‌ছে।

প্রটোকলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যাত্রী ও পর্যটকবাহী নৌযান চলাচলের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কোস্টাল এবং প্রটোকল রুটে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ ছাড়া সম্প্রতি মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম ভার‌তের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হচ্ছে বলে মনে করছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।