কিস্তির টাকায় কেনা ইজিবাইক হারিয়ে দিশাহারা কামাল পেলেন নতুন গাড়ি

কিস্তির টাকায় কেনা ইজিবাইক হারিয়ে দিশাহারা কামাল পেলেন নতুন ইজিবাইক। আজ শনিবার দুপুরে জামালপুর পৌরসভা প্রাঙ্গণেছবি: প্রথম আলো

কিস্তি ও সুদে টাকা নিয়ে বহু কষ্টে ব্যাটারিচালিত একটি ইজিবাইক কিনেছিলেন মো. কামাল শেখ (৫৫)। সেটি এক মাস আগে চুরি হয়ে যায়। উপার্জনের একমাত্র সম্বল হারিয়ে তিনি ছিলেন দিশাহারা। অবশেষে কামালের মুখে হাসি ফুটেছে। তাঁকে নতুন একটি ইজিবাইক দেওয়া হয়েছে।

গত ৯ এপ্রিল ‘কিস্তির টাকায় কেনা ইজিবাইক হারিয়ে দিশাহারা কামাল’ শিরোনামে প্রথম আলোর অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর অনেকেই তাঁকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছেন। প্রতিবেদনটি নজরে এলে জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ঘোষণা দেন, কামালকে একটি নতুন ইজিবাইক কিনে দেবেন। অবশেষে আজ শনিবার দুপুরে পৌরসভা প্রাঙ্গণে কামালের হাতে ইজিবাইকটি তুলে দেন তিনি।

কামাল শেখের বাড়ি জামালপুর পৌর শহরের পাথালিয়া গুয়াবাড়িয়া এলাকায়। তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। আর ছেলে পাঁচ হাজার টাকা বেতনে একটি চাকরি করেন। কামাল ও তাঁর স্ত্রী ময়না বেগম একটি টিনের ছাপরাঘরে বসবাস করেন। ইজিবাইকের আয় দিয়ে সংসার চালাতেন ও পরিশোধ করতেন ঋণের কিস্তি।

নতুন ইজিবাইক পেয়ে মো. কামাল শেখ আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘টানা প্রায় ২৫ বছর প্যাডেলের রিকশা চালিয়ে সংসারের খরচ জোগাতাম। বয়স হওয়ায় যাত্রী নিয়ে প্যাডেলের রিকশা চালাতে পারতাম না। কিস্তি ও সুদে টাকা নিয়ে বহু কষ্টে চার মাস আগে ব্যাটারিচালিত একটি ইজিবাইক কিনেছিলাম। কিন্তু চোরে নিয়ে গেল। ইজিবাইকটি চুরি হওয়ার পর কয়েক দিন চুলায় আগুন জ্বলেনি। পরে প্রথম আলোর একটি সংবাদ ও বিভিন্ন লোকজন আমাকে নিয়ে ফেসবুকে আমার কষ্টের কথাগুলো তুলে ধরেন। পরে পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন আমাকে ডেকে নেন। আমাকে একটি ইজিবাইক কিনে দেওয়ার কথা বলেন। সেই ইজিবাইকটি আজ আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো। ঘর ওঠানোর জন্য কয়েকজন ৬৬ হাজার টাকাও দিয়েছেন। সেই টাকায় একটি নতুন ঘর তুলতে পারব। আমি কল্পনাও করতে পারছি না, এভাবে আবার একটি নতুন ইজিবাইক ও ঘর তোলার টাকা পাব। সত্যিই আমি এখন খুশি।’

জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘কামাল একজন হতদরিদ্র ইজিবাইকচালক। ঋণ করে ইজিবাইকটি কিনেছিলেন। সেই ইজিবাইকের আয় দিয়ে ঋণের কিস্তি ও সংসার চালাতেন। ইজিবাইকটি চোরে নিয়ে যায়। প্রথমে ফেসবুক ও পরে প্রথম আলোর অনলাইনে বিষয়টি আমার নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে কামালকে আমি ডেকে একটি ইজিবাইক কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেই হিসেবে আজ ইজিবাইকটি কামালের হাতে তুলে দিলাম।’

আরও পড়ুন