খুলনায় নারী ফুটবলারদের মারধরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা গ্রামে বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলের চার নারী ফুটবলারকে মারধরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অধিকার আন্দোলন, গীতা ফাউন্ডেশন ও নাগরিক উদ্যোগ নামের তিনটি সংগঠন এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের নারীরা এখন সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। ফুটবল, ক্রিকেট সব জায়গায় এখন নারীদের জয়-জয়কার। কিন্তু বটিয়াঘাটায় নারী ফুটবলারদের যেভাবে মারধর করা হয়েছে, তা খুবই অমানবিক। সাদিয়া ও মঙ্গলী বাগচীকে শুধু মারধরই করা হয়নি, তাদের দেড় ঘণ্টা গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। মঙ্গলীর মাথা ফেটে রক্ত বের হলেও তাঁকে চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে ক্ষতস্থানে লবণ দিয়ে নির্যাতন করার হুমকি দিয়েছিলেন নির্যাতনকারী ব্যক্তিরা। প্রথম দিকে থানাও মামলা নিতে গড়িমসি করেছে।
বক্তারা আরও বলেন, অপরাধী ও প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ড নারীবিরোধী ও নারী জাগরণের অন্তরায়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে নারী স্বাধীনতা ও নারী জাগরণের পথ সুগম করতে হবে।
বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অধিকার আন্দোলন খুলনা জেলা শাখার সভাপতি সুব্রত কুমার মিস্ত্রীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি বিভুতোশ রায়। বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নিশিত রঞ্জন মিস্ত্রী, গীতা ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রসেনজিৎ দত্ত প্রমুখ।
গত ২৯ জুলাই বিকেলে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা গ্রামে চার নারী ফুটবলারকে মারধর করেন স্থানীয় কয়েকজন। তাঁরা তেঁতুলতলা সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড়। একাডেমির এক সদস্যের ছবি তার পরিবারের সদস্যদের দেখানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের মারধর করা হয়। এতে আহত হয় চার নারী ফুটবলার মঙ্গলী বাগচী, সাদিয়া নাসরিন, হাজেরা খাতুন ও জুঁই মণ্ডল।
এ ঘটনার পরদিন নূপুর খাতুন, তাঁর বাবা নুর আলম, ভাই সালাউদ্দিন ও মা রঞ্জি বেগমকে আসামি করে থানায় মামলা করে সাদিয়া। ওই মামলায় নুর আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার পরদিন সাদিয়াকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেন নূপুর, তাঁর মা ও ভাই। একই সঙ্গে সাদিয়া ও তার একাডেমির খেলোয়াড়দের শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপের হুমকি দেওয়া হয়েছে।