বাগেরহাটে উৎসবে মেতেছে সংবর্ধনা নিতে আসা কৃতী শিক্ষার্থীরা
শরতের আকাশজুড়ে ছিল মেঘের ঘনঘটা। ছন্নছাড়া সাদা মেঘ বৃষ্টিও ঝরাল কিছুটা। গোমড়ামুখো সেই আবহাওয়া উপেক্ষা করে সকাল থেকেই আসতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তাদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে বাগেরহাট বহুমুখী কলেজিয়েট স্কুল চত্বর। সেখানে আয়োজন করা হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের মূল আয়োজন। এতে কণ্ঠ মেলান শিক্ষার্থী, অতিথি ও অভিভাবকেরা।
এর আগে থেকেই সেখানে জড়ো হতে শুরু করে কৃতী শিক্ষার্থীরা। সংবর্ধনার নিবন্ধনের কার্ড হাতে সারিবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীরা মূল প্যান্ডেলের পাশের বুথ থেকে ক্রেস্ট ও স্ন্যাকস সংগ্রহ করে। অনেক দিন পর স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কুশল বিনিময় করে। তাদের হইহুল্লোড়ে ছিল উৎসবের আমেজ। চলে ছোট ছোট দলে আড্ডা। এ সময় সবার মুখে ছিল খুশির ঝিলিক।
সারা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের উৎসবটি পাওয়ার্ড বাই ‘বিকাশ’। সহযোগিতা করছে কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা। বাগেরহাটের উৎসবে অংশ নিতে আগে থেকে অনলাইনে নিবন্ধন করেন জিপিএ-৫ পাওয়া ৩২৪ শিক্ষার্থী।
বাগেরহাট বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক দোলন আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর বাগেরহাট প্রতিনিধি ইনজামামুল হক। কৃতী শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন, বাগেরহাট সনাকের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ চৌধুরী আবদুর রব, বাগেরহাট বন্ধুসভার উপদেষ্টা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার বকসী, বাগেরহাট বহুমুখী কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ মোসা. ফারহানা আক্তার, প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফিরোজ চৌধুরী, বন্ধুসভার উপদেষ্টা সৈয়দ মিজানুর রহমান, আহাদ উদ্দীন হায়দার প্রমুখ।
সকাল সাড়ে ৭টায় সবার আগে ভেন্যুতে এসে উপস্থিত হয় মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পাঁচ শিক্ষার্থী। তাদের একজন মোরেলগঞ্জে বিকে জিলবুনিয়া আহমাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার কৃতী শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমদ সিয়াম। সে বলে, ‘সকাল ছয়টার আগে বাড়ি থেকে রওনা হই। প্রথমে বাসে আসব বলে ভেবেছিলাম।’ কিন্তু বাসে আসতে দেরি হতে পারে, তাই অটোরিকশা ভাড়া করে পার্শ্ববর্তী হোগলাপাশা ইউনিয়নের সম্মিলিত মাধ্যমিক শিক্ষা নিকেতনের শরিফ মাহিন শেখ, অনুপ কুমার দাস, মো. জিহাদ খান ও আবিদা সুলতানা একসঙ্গে রওনা হয়।
আবিদা সুলতানা বলে, ‘আমি অনলাইনে নিবন্ধন করেছিলাম। এ রকম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আমরা চাই প্রথম আলো আমাদের কিশোর-তরুণদের জন্য এমন আরও অনেক আয়োজন করুক।’
জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী মৃদুল কুমার সেনের বাবা মিলন কুমার সেন এসেছেন অনুষ্ঠানে। তিনি বলেন, ছেলে অসুস্থ থাকায় তিনিই এসেছেন। ফলাফল প্রকাশের দিন ছেলের জিপিএ-৫ পাওয়ার খবরে যেমন আনন্দ পেয়েছিলেন, এই অনুষ্ঠানে এসেও তেমন ভালো লাগছে।