সংসদ সদস্য আয়েনের বিচারের দাবিতে দুই দিন ধরে সড়কে আ.লীগ নেতা

সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের বিচারের দাবিতে দুদিন ধরে রাজশাহীতে সড়কে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুরঞ্জিত সরকার। বৃহস্পতিবার সকালে নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে
ছবি: প্রথম আলো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের বিচারের দাবিতে দুই দিন ধরে সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মোহনপুর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জিত সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাজশাহীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টের উত্তর পাশে অবস্থান করছেন। এর আগে গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় প্রথমে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে ও পরে রাজশাহী প্রেসক্লাবের সামনে তিনি অবস্থান নেন। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তিনি সেখানে ছিলেন।

সুরঞ্জিতের বুকে ঝোলানো প্ল্যাকার্ডে লেখা আছে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিচার চাই। রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন ও তাঁর দুলাভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নির্যাতনের শিকার। ১. ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেলে বিরোধিতা করে ফেল করানো। ২. এমপির ক্যাডার বাহিনী দিয়ে হামলা করে হত্যার চেষ্টা ও অর্ধেক পঙ্গু বানানো এবং ৩. ২০২১ সালে ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন চাইলে হিন্দু জাতি ধর্ম তুলে কটূক্তি ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা। এই নির্যাতনের বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি।’

সুরঞ্জিত সরকার প্রথম আলোকে বলেন, সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন ও তাঁর ভগ্নিপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম প্রকাশ্যে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তিনি ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েও পরাজিত হন। পরবর্তী নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন চাইলে সংসদ সদস্য তাঁকে ধর্ম তুলে গালিগালাজ করেন।

সুরঞ্জিত সরকার অভিযোগ করে বলেন, সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন একজন হিন্দুবিদ্বেষী মানুষ। তাঁর বাবা রাজাকার ছিলেন। তথ্য-প্রমাণসহ সংবাদ সম্মেলন করে তিনি তা বলেছেন। সংসদ সদস্য তাঁর ক্যাডার বাহিনী দিয়ে তিনি (আয়েন) তাঁর ওপর হামলা করেন। সেই হামলায় তিনি প্রায় মারা যাচ্ছিলেন। ভারতে চিকিৎসার পর কোনোমতে বেঁচে ফিরেছেন। এখনো বছরে কয়েকবার চিকিৎসা করতে তাঁকে ভারতে যেতে হয়।

সুরঞ্জিত সরকার আরও বলেন, ‘চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে করতে আমি একেবারে শেষ হয়ে গেছি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আয়েন উদ্দিন ও তাঁর দুলাভাইয়ের (ভগ্নিপতি) বিচার চাই। তাই রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।’ তিনি বলেন, গতকাল সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে তাঁকে আয়েনের লোকজন এসে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেখান থেকে প্রেসক্লাবের সামনে গেলে সেখানেও বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে তর্ক শুরু হলে প্রেসক্লাবের সাংবাদিকেরা বেরিয়ে এলে তাঁরা চলে যান।

আরও পড়ুন

অভিযোগের বিষয়ে সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুরঞ্জিতের মাথা ঠিক নেই। ওকে তো হিন্দুরাই মেরেছে। ও তখন বলেছিল, “এমপি না থাকলে আমাকে মেরেই ফেলত।”এখন এসব করে বেড়াচ্ছে।’

সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন আরও বলেন, মোহনপুর উপজেলার সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষ সুরঞ্জিতকে ভোট দেননি। এ জন্য তিনি জিততে পারেননি। তিনি (আয়েন) দ্রুত সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষকে নিয়ে মোহনপুরে একটি সমাবেশ করবেন। তখন জনগণ বুঝতে পারবেন, তিনি হিন্দুবিদ্বেষী না তাঁদের পক্ষের লোক।