সাতক্ষীরা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আহত বাংলাদেশি যুবক হাবিবুর রহমানকে (৩০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগের দিন বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সীমান্তের ৭ নম্বর মেইন পিলারের কাছে শূন্যরেখায় হাবিবুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। তিনি উপজেলার ঘোনা গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে।
আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে আহত হাবিবুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়। তিনি বলেন, গতকাল খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে তাঁর মা হামেদা খাতুন সন্ধ্যার আগে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাবিবুর আরও বলেন, তিনি আগের চেয়ে ভালো আছেন। চিকিৎসকেরা বলেছেন, অস্ত্রোপচার করতে হবে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহফুজুর রহমান বলেন, হাবিবুর রহমান নামের এক যুবককে দুই চোখ, মুখমণ্ডলসহ শরীরের কয়েকটি স্থানে ছোররা গুলি লেগে জখম অবস্থায় গতকাল সকাল ৬টা ২০ মিনিটে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই সময় তাঁর মুখমণ্ডলের বিভিন্ন স্থান দিয়ে রক্ত ঝরছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘোনা গ্রামের হাবিবুর রহমানসহ কয়েকজন ঘোনার সীমান্ত এলাকা থেকে বুধবার রাতে ভারতীয় সীমানা পাকিরডাঙ্গা এলাকায় তারকাঁটার বেড়ার কাছে যান। রাত দুইটার দিকে ভারতের বশিরহাটা মহকুমার পাকিরডাঙ্গা ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে হাবিবুরের দুই চোখ ও মুখমণ্ডল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সঙ্গে থাকা অন্যরা হাবিবুরকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে তাঁর মা ও পরিবারের লোকজন তাঁকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
আজ সকালে মুঠোফোনে ঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল বাসার বলেন, হাবিবুর আগে বাসশ্রমিকের কাজ করতেন। স্থানীয়ভাবে জানতে পেরেছেন, কিছুদিন ধরে তিনি একটি মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত।
ঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নীলকান্ত মণ্ডল বলেন, হাবিবুর মাদকদ্রব্য, বিশেষ করে ফেনসিডিল পাচারের কাজ করেন। ঘোনা সমীন্ত এলাকায় মাদকদ্রব্য পাচারের কয়েকটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। একটি চক্রের হয়ে হাবিবুরসহ কয়েকজন বুধবার রাতে মাদকদ্রব্য আনতে গিয়ে এ ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন।
আজ এ বিষয়ে জানার জন্য সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশরাফুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে বিজিবির একটি সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় বাংলাদেশের ঘোনা ও ভারতের পাকিরডাঙ্গা ক্যাম্পের শূন্যরেখায় কোম্পানি পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের বৈকারি, ভোমরা কোম্পানি কমান্ডারসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। আর ভারতের পাকিরডাঙ্গা ক্যাম্পের কমান্ডারসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।