নাসির উদ্দিনের বাড়ি সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার উফতিরপাড় গ্রামে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হালুয়ারগাঁও এলাকায় একটি মালবাহী ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। দুজনই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া অন্য ব্যক্তি হাদিউল কামালীর (৩৮) বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ধাওরাই গ্রামে।
মর্গের সামনে দুই ভাইকে ঘিরে যখন মানুষের জটলা, তখন পাশে আরেকজন ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছিলেন। তিনি নাসিরের চাচা আবদুস সোবহান।
আবদুস সোবহান জানান, নাসিররা সাত ভাই, দুই বোন। তাঁদের মধ্যে নাসির দ্বিতীয়। চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন তিনি। গ্রামের একটি মামলায় তাঁকেও আসামি করা হয়। গতকাল সোমবার রাতে তিনি চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসেন। আজ সকালে ওই মামলায় হাজিরা দিতে সুনামগঞ্জ আদালতে যাচ্ছিলেন। পথে হালুয়ারগাঁও এলাকায় তাঁকে বহনকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় একটি ট্রাক। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। আর ঘটনাস্থলেই নাসির নিহত হন।
আবদুস সোবহান প্রথম আলোকে বলেন, নাসির এখনো বিয়ে করেননি। খুবই শান্ত স্বভাবের ছিলেন। এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। পরিবারের সবাই তাঁকে ‘বুঝদার’ হিসেবে মানতেন। পুরো পরিবারটি তিনিই আগলে রেখেছিলেন।
দবির মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরার সব শেষ। বাড়ি থাকি সকালে খাইয়া আমার ভাই বার অইছে কোর্ট আইত। এক ঘণ্টা পরই ফোন পাই, ভাই নাই। হায়রে ভাই...।’
আবদুর রহমানের কান্না তখনো থামছেই না। পাশে থাকা উফতিরপাড় গ্রামের আরেক যুবক তাঁকে জড়িয়ে ধরে আছেন। ওই যুবক বলেন, ‘নাসিরের মতো ছেলে হয় না। এ ঘটনায় পুরো গ্রামের মানুষ কাঁদছে। কীভাবে যে পরিবারটি সান্ত্বনা পাবে, বুঝতে পারছি না।’