ঝালকাঠি-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মানেই আমির হোসেন আমু

আমির হোসেন আমু
ফাইল ছবি

১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন আমির হোসেন আমু। এরপর যে কটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করেছে, সব কটিতেই দলের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-২ (সদর-নলছিটি) আসনে দলীয় মনোনয়ন পান প্রবীণ এই রাজনৈতিক। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

ঝালকাঠিতে আমির হোসেন আমুকে অভিভাবক হিসেবে মানেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। তিনি আবারও মনোনয়ন পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীরা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দলীয় যেকোনো সিদ্ধান্ত আমির হোসেন আমুর নির্দেশে বাস্তবায়ন করি। তিনি আমাদের অভিভাবক। তাঁর বিচক্ষণ রাজনীতির কারণে আমাদের দলে কোনো কোন্দল নেই। ঝালকাঠি-২ আসনে আমু ভাইয়ের বিকল্পও নেই।’ প্রতীক বরাদ্দের পর তাঁর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচার শুরু করতে নেতা-কর্মীরা মুখিয়ে আছেন বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন

দলের একাধিক প্রবীণ নেতা ও আমির হোসেনর জীবনবৃত্তান্ত থেকে জানা গেছে, তিনি ১৯৭৩ সালে ঝালকাঠি ও রাজাপুর নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়া তিনি ২০০০ সালের উপনির্বাচনে ঝালকাঠি-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের খাদ্যমন্ত্রীর (টেকনোক্র্যাট) দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়ে তিনি শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমু ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ (মালেক) থেকে। পরের যে নির্বাচনগুলোয় আওয়ামী লীগ অংশ নিয়েছিল, তার সব কটিতেই দলের মনোনয়নে ভোট করেন তিনি।

আমির হোসেনের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের বর্ণনা করতে গিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনোয়ার হোসেন বলেন, আমির হোসেন কিশোর বয়সে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের সংস্পর্শে আসেন। ১৯৫৪ সালে অনুষ্ঠিত যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রচারে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সেই সময় মিছিলে নেতৃত্ব দানকালে কারাবরণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে বরিশাল সর্বদলীয় ভাষা আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ৬ দফা ও উনসত্তরের গণ–আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাঠ শেষ করে আইন পেশায় যুক্ত হন আমির হোসেন। তিনি ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৮১ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তিনি কারাবরণ করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর তিনি তিন বছর কারাবরণ করেন। পরে হাইকোর্টে রিট করার পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।

ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলম বলেন, সংসদ সদস্য হিসেবে আমির হোসেন আমু এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, সড়ক-সেতু, কালভার্ট ইত্যাদি নির্মাণ করেছেন। তিনি প্রাকৃতিক দুর্যোগ আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর মৌলিক মানবাধিকার পূরণের জন্য বিভিন্ন সময় নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণসহ বিপর্যস্ত মানুষের পাশে থেকে আপৎকালীন সাহায্য ও সেবা করেছেন। নেতা-কর্মীরা আশা করছেন, আসন্ন নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন।