কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

শনিবার দুপরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই হলের নেতা–কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে সড়কে বাঁশ ও চেয়ার–টেবিল দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে একটি পক্ষ।
ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে টানা দুই দিন পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আজ রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ এমদাদুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আরও পড়ুন

তদন্ত কমিটিতে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক শেখ মকছেদুর রহমানকে আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। এ ছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী, বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জি এম মনিরুজ্জামান এবং ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাঁদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত কমিটি তথ্য-উপাত্ত, ভিডিও সংগ্রহ করছে। কমিটির সদস্যরা একসঙ্গে বসে দ্রুত কাজ শুরু করবে।

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুরে মসজিদে যাওয়ার পথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে ‘সাইড’ দেওয়া নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দুই হলের মধ্যবর্তী জায়গায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই সময় ১৫ জন আহত হয়েছিলেন। পরে গতকাল শনিবার বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বঙ্গবন্ধু হল পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় লাঠিসোঁটা ও হকিস্টিক নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর হামলা করে। সংঘর্ষে অন্তত ৫০ শিক্ষার্থী আহত হন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সূত্র জানায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল সন্ধ্যায় উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলনকক্ষে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আজ রোববার ও আগামীকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করল।

অভিযোগ আছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা পাস করার পরও বছরের পর বছর হলে থাকছেন। তাঁদের মদদে ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। চাকরি, নিয়োগ–বাণিজ্য, দরপত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা অজুহাতে তাঁরা বারবার ক্যাম্পাস অস্থির করার চেষ্টার করছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পরিবেশ বজায় থাকুক। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেন অছাত্রদের কাছে জিম্মি না হন।