ভারতের বেনারস থেকে আসা বিশ্বের দীর্ঘ যাত্রার প্রমোদতরি ‘গঙ্গা বিলাস’ এখন সিরাজগঞ্জে অবস্থান করছে। আজ মঙ্গলবার সকালে যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জের পুরাতন জেলখানা ঘাট এলাকায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঘাটে জাহাজটি নোঙর করে।
সকাল সাতটার দিকে প্রমোদতরিটি সিরাজগঞ্জে নোঙর করার সঙ্গে সঙ্গে বিদেশি পর্যটকদের স্বাগত জানান জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা। পরে পর্যটকেরা তাঁদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা, দর্শনীয় স্থান, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ঘুরে দেখছেন পর্যটকেরা। তাঁদের এই ভ্রমণ দেশকে উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে। ভ্রমণে আসা বিদেশি পর্যটকেরা মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশ আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে এবং এখানকার পর্যটন খাতে সম্ভাবনা বেড়েছে। তাঁরা বন্ধু ও আত্মীয়দের নিয়ে আবার বাংলাদেশে ঘুরতে আসতে চেয়েছেন।
সূত্রে জানা গেছে, সুইজারল্যান্ডের ২৭ ও জার্মানির একজন নাগরিক নিয়ে বাংলাদেশের জলসীমানায় চলছে ৬২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ মিটার প্রস্থের প্রমোদতরি ‘গঙ্গা বিলাস’। তিনটি ডেকসহ পাঁচ তারকা মানের জাহাজটিতে ২৮টি বিলাসবহুল কামরার পাশাপাশি আধুনিক রেস্তোরাঁ, পানশালা, স্পা সেন্টারসহ নানা সুযোগ-সুবিধা আছে।
ভারতের উত্তর প্রদেশের বেনারস থেকে বাংলাদেশ হয়ে আসাম পর্যন্ত নদীপথে মোট ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দেবে প্রমোদতরিটি। এ যাত্রাপথে সময় লাগবে ৫১ দিন।
দীর্ঘ যাত্রার অংশ হিসেবে আজ সকালে সিরাজগঞ্জে নোঙর করে প্রমোদতরিটি। এরপর জেলা ও নৌ পুলিশের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের সহায়তায় সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল নবরত্ন মন্দিরসহ জেলার তাঁতশিল্প ঘুরে দেখেন পর্যটকেরা। সকাল ১০টার দিকে তাঁরা আবার যাত্রা শুরু করেন।
১৩ জানুয়ারি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যাত্রার উদ্বোধন করেন। ১৩ মার্চ প্রমোদতরিটি আসামের দিব্রুগড় থেকে একই পথে ফেরার কথা আছে। প্রমোদতরিটি বগুড়া, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে রংপুরের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে ১৫ ফেব্রুয়ারি ফের চিলমারী হয়ে আসামের ধুবরির উদ্দেশে রওনা হবে।
আসামের বিভিন্ন স্থান ঘুরে ১ মে আসামের দিব্রুগড়ে গিয়ে ভ্রমণের সমাপ্তি হবে। ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার যাত্রায় দুই দেশের ২৭টি নদী ও ৫০টি পর্যটন কেন্দ্র ঘুরবে ‘গঙ্গা বিলাস’। এতে জনপ্রতি খরচ হচ্ছে ভারতীয় মুদ্রায় ১২ লাখ ৫৯ হাজার রুপি।