মারধরের ভিডিও করা যুবককে ‘পেটানো’ সেই ইউপি সদস্য আটক

গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য রাশেদুল হক এক যুবককে মারধর করেন
ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া

চুরির অভিযোগে এক যুবককে পেটানোর দৃশ্য ভিডিও করায় আরেক যুবককে মারধরের অভিযোগ ওঠা গাজীপুরের সেই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যকে আটক করা হয়েছে। মারধরের ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে গতকাল মঙ্গলবার রাতে সেই ইউপি সদস্যকে আটক করে জয়দেবপুর থানার পুলিশ। ওই ইউপি সদস্যের নাম রাশেদুল হক। তিনি গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভাওয়াল মির্জাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিকেবাড়ি এলাকায় গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চুরির অভিযোগ তুলে এক যুবককে মারধর করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য রাশেদুল হক। মারধরের সেই ভিডিও করার অভিযোগে এ সময় তিনি আরেক যুবককে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে গতকাল প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘গাজীপুরে মারধরের ভিডিও করায় যুবককে বেধড়ক পেটালেন ইউপি সদস্য’ শিরোনাম সংবাদ প্রকাশিত হয়। রাতে ওই ইউপি সদস্যকে আটক করে পুলিশ।

জয়দেবপুর থানার দায়িত্বরত উপরিদর্শক (এসআই) রাখাল দেবনাথ ইউপি সদস্য রাশেদুল হককে আটকের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, রাশেদুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হবে। গতকাল নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গেও পুলিশ কথা বলেছে। ইউপি সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে কি না, তা জানতে চাইলে এসআই বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই তিনি ছাড় পাবেন না। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

ভিডিওতে দেখা যায়, পিটুনি খেয়ে এক যুবক মাটিতে বসে পড়েছেন। সে অবস্থাতেও ইউপি সদস্য রাশেদুল হক লাঠি দিয়ে তাঁকে পেটাচ্ছেন আর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন। ইউপি সদস্য বারবার তাঁকে বলছেন, ‘ভিডিও করলি কেন?’ ২৩ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে ঘটনাস্থলে অনেককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে কেউ ইউপি সদস্যকে থামানোর চেষ্টা করেননি।

বিকেবাড়ি ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউপি সদস্য রাশেদুল হক ছোটখাটো নানা বিষয়ে যখন যাকে খুশি মারধর করে থাকেন। বিচার-সালিসের নাম করে মানুষ পেটান।
রাশেদুল হক গতকাল বলেছিলেন, ‘আমি একটা চোরের বিচার করছিলাম। এ পর্যন্ত সাতবার চুরি করেছে। আমার কাছে ধরাও পড়েছে। তাকে পিটিয়ে শাস্তি দেওয়ার সময় পাশ থেকে ওই ছেলে ভিডিও করছিল। এ কারণে তাকেও পেটানো হয়েছে।’

ভাওয়াল মির্জাপুর ইউপির চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুসল্লী বলেন, ‘ইউপি সদস্য বিচারের নামে কাউকে মারধর করতে পারেন না। কারও বিচার আমরা না করতে পারলে প্রয়োজনে তাঁকে আইনের হাতে তুলে দেব।’