জাতীয় পার্টি মানেই রংপুর। রংপুরকে ঘিরেই সারা দেশের জাতীয় পার্টি বলা চলে। সেই রংপুরে আগের মতো এখন দলের অবস্থা নেই। এর কারণ বলবেন?
মোস্তাফিজার রহমান: একসময় জাতীয় পার্টির রমরমা অবস্থা ছিল। এখন খুবই খারাপ, একথা সত্য। জোট-মহাজোটের রাজনীতিতে গিয়ে দলের অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে চলে আসে। জনগণের দাবিদাওয়া নিয়ে জাতীয় সংসদে ভূমিকাও রাখতে পারেনি। আজকাল গ্রামগঞ্জের মানুষজনও রাজনীতি বোঝেন। জনগণের সমস্যার কথা তুলে ধরতে না পারা এবং বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি না থাকায় দল নাজুক অবস্থায় চলে যায়।
একসময় রংপুরের ছয়টি আসনেই জাতীয় পার্টির ছিল। এখন দুইটিতে এসে গেছে। এর কারণ কী মনে করেন?
মোস্তাফিজার রহমান: আওয়ামী লীগের কূটকৌশলের ফাঁদে পড়ে জাতীয় পার্টির আসন কমে গেছে। যদিও প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় জাতীয় পার্টির ভোটব্যাংক অনেক ভালো। তারপরও আমাদের প্রার্থী দেওয়া হয়নি। এই দুটি আসনে নির্বাচন করতে বাধ্য করা হয়েছে। দুটি আসন মানে দলের অবস্থা দুর্বল নয়। বলা চলে মহাজোটের রাজনৈতিক প্যাঁচে পড়ে সংসদীয় আসন কমে গেছে।
রংপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য রাহগির আল-মাহি সাদ এরশাদকে জনগণ কাছে পাননি। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
মোস্তাফিজার রহমান: এই আসনটি আসলে দলীয় চেয়ারম্যানের আসন। তিনি (সাদ এরশাদ) উপনির্বাচন করে জয়লাভ করেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি রংপুরে আসেননি। তাঁর সঙ্গে রংপুরের মানুষের কোনো যোগসূত্র নেই। এমপিকে কাছে না পেয়ে জনগণের নানামুখী সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি দলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভীষণভাবে। এটি কাটিয়ে উঠতে আমাদের ধকল পোহাতে হচ্ছে।
জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও তিনি এখনো রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনের সংসদ সদস্য। তাঁকে নিয়ে নানা আলোচনা আছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না?
মোস্তাফিজার রহমান: মসিউর রহমান রাঙ্গাকে নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তিনি সংসদ সদস্য হয়ে কাজ করলেও দলের নেতা-কর্মীরা তাঁর সঙ্গে নেই। তাঁর রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির কোনো ম্যাসেজ ছিল না। এর ফলে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কোনো শঙ্কা নেই।
দলের নাজুক অবস্থা কাটিয়ে তুলতে এই মুহূর্তে করণীয় কী মনে করছেন?
মোস্তাফিজার রহমান: মাঠপর্যায়ে কাজ করতে হবে। যেটি আগে একদম কমে গিয়েছিল। দলকে এগিয়ে নিতে গ্রামেগঞ্জে আবার দলের কার্যক্রম নতুন উদ্যমে শুরু করতে হবে। এই কাজ ইতিমধ্যে শুরু করাও হয়েছে। জেলার উপজেলাগুলোর সম্মেলন শুরু হয়েছে। মহানগরের সম্মেলন হবে। এতে করে মাঠপর্যায়ে নেতা-কর্মীরা চাঙা হতে শুরু করেছেন। এককথায় মহাজোটের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে দলকে গোছাতে হবে।