চট্টগ্রামে ঢোল-ঘুঙুরের তালে গরুর শোভাযাত্রা, আনন্দে মাতোয়ারা শিশুরা
ঢোলের তালে তালে এগিয়ে চলেছে ‘বাংলার ডন’। পায়ে ঘুঙুর, গায়ে গয়না। তাকে ঘিরে ছুটছে শিশু-কিশোরেরা। উল্লাসে মুখর চারপাশ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের সিআরবি শিরীষতলায় ছিল এমনই চিত্র। কোরবানির গরু সাজিয়ে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সেখানে আয়োজন করা হয় শোভাযাত্রা ও প্রদর্শনী
পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন ক্লাব গতবারের মতো এবারও এই অভিনব শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। গায়ে গয়না পরা নানা রঙের ও আকারের গরু অংশ নেয় এতে। দুপুর থেকেই শুরু হয় এই আনন্দ-আয়োজন। সন্ধ্যা ছয়টাতেও গরু নিয়ে দৌড়াচ্ছিল শিশুরা। একক কেউ এই আয়োজন করেন না। কিশোর-তরুণেরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে শোভাযাত্রায় চলে আসেন।
সিআরবির পাশের বাসিন্দা শিশু আবদুল ওয়াজেদ। প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকায় তাদের কেনা গরুটির নাম দিয়েছে ‘বাংলার ডন’। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে সে বলে, ‘কয়েক দিন আগে বাবা গরু এনেছে। আমি নিয়মিত গরুকে খাওয়াই। আজ বড় ভাইদের সঙ্গে শোভাযাত্রায় এসেছি। অনেক ভালো লাগছে।’
আজ দুপুর থেকেই কাজীর দেউড়ি ও আশপাশের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার শিশু-কিশোর ও তরুণেরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন। নানা সড়ক ঘুরে তাঁরা সিআরবি এলাকায় এসে থামেন। পরে আবার ফিরে যান নিজ নিজ এলাকায়।
সামির ইকবাল হোসেন ও তাঁর বন্ধুরা শোভাযাত্রায় এনেছিলেন প্রায় তিন লাখ টাকায় কেনা ‘সাদা বাঘ’ নামের গরু। সামির বলেন, তাঁদের বাড়ি দেওয়ানহাট এলাকায়। চকরিয়া থেকে কয়েক দিন আগে গরুটি কেনা হয়েছে।
অন্যদিকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় কেনা গরু নিয়ে এসেছিলেন চার বন্ধু। সবার বাড়ি কাজীর দেউড়ি এলাকায়। গরুটির গলায় লাল মালার কাপড়, মাথায় তাজ। শাহরিয়ার হোসেন নামে এক কিশোর বলে, ‘গরু নিয়ে আমরা কাজীর দেউড়ি, জামালখান, ব্যাটারিগলি ঘুরেছি।’
এ ভিন্নধর্মী আয়োজন দেখতে অনেকেই সিআরবি এলাকায় ভিড় করেন। সন্তানদের নিয়ে আসেন বাবা-মায়েরা। ঢোলের তালে গরু যখন হাঁটছিল, শিশুরা তখন ভাসছিল আনন্দে।
কাজীর দেউড়ির বাসিন্দা ফাহমিদুল ইসলাম সাত বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে এসেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গরুর শোভাযাত্রা দেখতে আমাদের এলাকা থেকে অনেক শিশু এসেছে। আমার ছেলে আইয়ানও বায়না ধরেছিল, তাই চলে এলাম।’