পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় তাফসির আহমেদ (২৪) নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পুলিশ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তিনটি অস্ত্র জব্দ করা হয়। এ নিয়ে মামলায় ১০ জন গ্রেপ্তার হলেন। পুলিশের দাবি, পদ্মা নদীতে অবৈধ বালু ব্যবসা নিয়ে বিরোধের কারণে ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে হত্যা করা হয়।
গ্রেপ্তার ৯ জনকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে রিমান্ড শেষে তাঁদের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে হাজির করা হয়। সেখানে পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান। পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে ৫ থেকে ৮টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে।
তাঁরা হলেন উপজেলার নতুন রূপপুর গ্রামের মানিক হোসেন (৩৬), রাজীব হোসেন (৩০), চমন রহমান (৩৮), সাহাপুর ইউনিয়নের দিয়ার সাহাপুর গ্রামের ফসিউল আলম (২৭), চর সাহাপুর গ্রামের শাহিন সরদার (২৮), চর রূপপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম (৩২), সলিমপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন (৩৭), চর রূপপুর গ্রামের ইসলাম হোসেন (৩৪), লক্ষ্মীকুণ্ডার মাহফুজুর রহমান (৩৫)। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ও তিনটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত ছাত্রলীগ নেতা তাফসির আহমেদ উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর মোড় এলাকার তাইজুর রহমানের ছেলে। তিনি পাকশী ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের কর্মী। গত ১৭ জুন রাতে তিনি লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামে এমপি মোড়ে একটি অফিসে বসেছিলেন। রাত ১০টার দিকে হেলমেট পরা কয়েকজন যুবক মোটরসাইকেলে করে এসে তাঁকে গুলি করে হত্যা করেন।
পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি জানান, ঘটনার দুদিন পর তাফসির আহমেদের মা নাহিদা আক্তার বাদী ঈশ্বরদী থানায় মামলা করেন। এর পর থেকেই পুলিশ হত্যাকারীদের খুঁজতে মাঠে নামে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার চার দিন পর অনিক হোসেন (২৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুই সপ্তাহ ধরে ঢাকা, গাজীপুর, কুষ্টিয়া ও পাবনার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আকবর আলী আরও বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সঙ্গে নিহত তাফসির আহমেদ পরিবারের দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। পদ্মা থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার ব্যবসা নিয়ে এই বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। আর এর জেরে তাফসিরকে হত্যা করা হয়। রিমান্ড শেষে ওই ৯ জনকে আবার জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।