কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, সব উপেক্ষা করে টাঙ্গাইলে কৃতী শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস
সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা। গুমোট গরম। এর মধ্যেই শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করে টাঙ্গাইল শহরের শিবনাথ উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। সেখানে কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলাকালে নামে বৃষ্টি। থেমে যায় কিছুক্ষণ পরেই। এরপর কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি। প্রকৃতির এমন আচরণের মধ্যেও উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে টাঙ্গাইলের এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা।
প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় সারা দেশের ৬৪টি জেলায় পর্যায়ক্রমে জিপিএ-৫ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের উৎসবটি পাওয়ার্ড বাই ‘বিকাশ’। সহযোগিতা করছে কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।
টাঙ্গাইলে সংর্ধনা নিতে অনলাইনে নিবন্ধন করা কৃতী শিক্ষার্থীরা আজ সকালে এসেই নির্দিষ্ট বুথ থেকে ক্রেস্ট, স্ন্যাকস ও উপহারসামগ্রী সংগ্রহ করে। এ সময় তারা বন্ধুদের সঙ্গে ছবি তোলা ও আড্ডায় মেতে ওঠে। সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এতে বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর। তিনি বক্তব্যের শুরুতে তিনজন শিক্ষার্থী এবং একজন অভিভাবকের অনুভূতি শোনেন। এরপর আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সামনের দিনগুলোয় প্রতিযোগিতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পরস্পরকে সহযোগিতা করে এগিয়ে যেতে হবে। প্রত্যেকে যদি নিজের প্রতি দায়িত্বশীল হয়, তাহলেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল করিম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভালো ফলাফল করার জন্য তোমাদের সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। এটা শুরু। এইচএসসিতেও ভালো ফলাফল করতে হবে। তারপর মেডিকেল, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে তোমরা কর্মক্ষেত্রে যাবে। সব ক্ষেত্রেই ভালো করার জন্য পরিশ্রম করতে হবে। তোমরা সব সময় দুর্নীতি, অনিয়ম ও খারাপ কাজকে ঘৃনা করবে, ভালো কাজের সঙ্গে থাকবে।’
শিবনাথ উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ওমর আলী বলেন, ‘তোমরা প্রত্যেকেই ভালো করেছ। তাই তোমাদের সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। ভালো ফলাফলের পাশাপাশি তোমাদের প্রত্যেককে ভালো মানুষ হতে হবে। তোমরা আগামী দিনের দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে। তোমরা ভালো হলে দেশ ভালো নেতৃত্ব পাবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের নির্বাহী সালমুন ইকরাম। স্বাগত বক্তব্য ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান প্রথম আলোর টাঙ্গাইলের নিজস্ব প্রতিবেদক কামনাশীষ শেখর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টাঙ্গাইল বন্ধুসভার উপদেষ্টা জিনিয়া বখ্শ।
অনুষ্ঠানের মাঝে বৃষ্টি শুরু হয়। এতে কিছুটা ছন্দপতন ঘটে। তবে পরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা মেতে উঠে আনন্দ–উল্লাসে। স্থানীয় ব্যান্ড সংগীত দল টাচে্র শিল্পী লিজু বাউলা ও সুফি শামীমের গানের সঙ্গে নেচে গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে অনুভূতি জানাতে এসে কৃতী শিক্ষার্থী নিশাত সিদ্দিকী বলে, ‘সব সময় মনে থাকবে জিপিএ-৫ পেয়েছিলাম বলে প্রথম আলো আমাদের সংবর্ধনা দিয়েছিল।’ শিক্ষার্থী তাসনিয়া শারমিন বলে, ‘ভালো ফলাফলের জন্য সংবর্ধনা দেওয়ায় আমি খুবই আনন্দিত। ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল করার জন্য আমাদের প্রেরণা জোগাবে।’ অপর শিক্ষার্থী আজম খান বলে, ‘এই সংবর্ধনা পেয়ে আমরা অনুপ্রাণিত।’
দিনব্যাপী সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট, প্রথম আলো ই-পেপার (১ মাস) ও চরকির (১৫ দিন) ফ্রি সাবস্ক্রিপশন, শিখোর সৌজন্যে বিনা মূল্যে কোর্স ও ফ্রেশ ব্র্যান্ডের স্ন্যাকস বক্স।