তাহসিনের বাবা মো. আমজাদ আলী নর্থবেঙ্গল সুগার মিলে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। আগামী অক্টোবরে তিনি অবসরে যাচ্ছেন। তাহসিনের মা খাদিজা বেগম গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে তাহসিন ছোট। দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে।

নটর ডেম কলেজ থেকে জিপিএ–৫ পেয়ে গত বছর এইচএসসি পাস করেছেন তাহসিন। এরপর মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেও সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ মেলেনি। পরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যানে ভর্তি হন। এবার আবার মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। অবশেষে তিনি লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবারের অভাব–অনটন।

তাহসিনের বাবা আমজাদ আলী বলেন, তাহসিন পড়াশোনায় সব সময়ই মনযোগী ছিল। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর তাহসিন ঢাকায় নটর ডেম কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। কিন্তু তিনি আর্থিক অনটনের কারণে ছেলেকে ঢাকায় পাঠাতে চাননি। পরে তাহসিন নিজের চেষ্টাতেই ঢাকায় গিয়ে ভর্তি হয়। সেখানে টিউশনি করিয়ে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করেছে ছেলে। এখন কীভাবে ছেলেকে মেডিকেলে পড়াবেন, সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।

মা খাদিজা বেগম বলেন, ‘ছেলেকে ডাক্তার বানানোই আমাদের একমাত্র স্বপ্ন ছিল। সে নিজের চেষ্টায় মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। কিন্তু মেডিকেলে পড়ানোর খরচ জোগার করার যোগ্যতা আমাদের নাই। ওর বাবাও অবসরে যাচ্ছে। এখন আমরা কী করব ভেবে পাচ্ছি না।’

তাহসিন আহম্মেদ বলেন, ‘এর আগে নটর ডেম কলেজে ভর্তি নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। পড়ালেখার খরচ নিজে জোগাড় করব, এ শর্তে ভর্তি হয়েছিলাম। প্রাইভেট পড়িয়ে পড়াশোনা চালানোর পাশাপাশি জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসিতে শিক্ষা বোর্ড বৃত্তি পেয়েছিলাম। এভাবেই এত দিন পড়াশোনা করেছি। মেডিকেলে কোনোরকমে ভর্তি হতে পারলে হয়তো একটা ব্যবস্থা করে নেব। আমাকে ডাক্তারি পড়তেই হবে।’