খাওয়াদাওয়া করছে না মুখপোড়া হনুমানটি, দেওয়া হচ্ছে স্যালাইন

সিলেটে উদ্ধার হওয়া মুখপোড়া হনুমানটি খাওয়াদাওয়া না করায় স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। আজ বিকেলে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটে উদ্ধার হওয়া মুখপোড়া হনুমানটি ভালো নেই। গত সোমবার থেকে হনুমানটি খাওয়াদাওয়া করছে না। এতে শারীরিক অবস্থা দুর্বল হয়ে যাওয়ায় তাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন প্রাধিকারের কর্মীরা হনুমানটির চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার দুই দফা হনুমানটির শরীরে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হনুমানটিকে বিভিন্ন ফল খাওয়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

৪ সেপ্টেম্বর সকালে সিলেট বিমানবন্দরসংলগ্ন কাকুয়ারপাড় এলাকার সড়কের পাশে একটি বিদ্যুতের খুঁটির নিচ থেকে মুখপোড়া হনুমানটি পাওয়া যায়। এটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল। হনুমানটিকে উদ্ধার করেছিলেন রিপন কুমার দেব (৩৩) নামের এক ট্রাকচালক। হনুমানটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রায় ৩৫ ফুট ওপর থেকে পড়ে আহত হয়েছিল। রিপন কুমার দেব আহত হনুমানটিকে সেবা দিয়ে কিছুটা সুস্থ করে তুলেছিলেন। ৫ সেপ্টেম্বর সকালে সেটি গাছেও উঠেছিল। তবে বিকেলের দিকে হনুমানটি গাছ থেকে নিচে পড়ে আহত হয়। এ সময় হনুমানটি অপরিণত মৃত বাচ্চা জন্ম দেয়। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ে হনুমানটি।

আরও পড়ুন

হনুমানটির চিকিৎসাসেবায় এগিয়ে আসেন পরিবেশবাদী সংগঠন ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর। ৫ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি প্রাধিকারের কর্মীদের নিয়ে হনুমানটিকে রিপন কুমার দেবের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএমসি ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতালে এর চিকিৎসা শুরু হয়।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রায় ৩৫ ফুট ওপর থেকে মাটিতে পড়ে গিয়েছিল এই মুখপোড়া হনুমানটি। এরপর হনুমানটি অপরিণত মৃত বাচ্চা জন্ম দেয়
ছবি: সংগৃহীত

প্রাধিকারের সভাপতি মো. মাহাদী হাসান বলেন, মুখপোড়া হনুমানটি অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় গাছ থেকে পড়ে যায়। এরপর অপরিণত মৃত বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। অন্যদিকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ায় শরীরের বিভিন্ন স্থান ছিলে গিয়েছিল। পরে হনুমানটির শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর হনুমানটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছিল। এর মধ্যে গত সোমবার থেকে এটি খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দেয়। খাওয়ায় অরুচি থেকে শরীর আরও দুর্বল হচ্ছিল। গত সোমবার থেকে আজ পর্যন্ত কেবল দুই-এক কামড় শসা ও পেঁপে খেয়েছে। এই খাবার তার শরীরের চাহিদার তুলনায় কম। এ জন্য গতকাল ও আজ হনুমানটির শরীরে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।

মাহাদী হাসান বলেন, ‘হনুমানটি মুক্ত অবস্থায় চলাফেরা করে খাওয়াদাওয়া করত। আবদ্ধ অবস্থায় রাখায় সেটি খাওয়াদাওয়া কমিয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ায় শরীরে কিছুটা ক্ষত রয়ে গেছে। আবার অস্ত্রোপচারের ফলেও দুর্বল হতে পারে। তবে আমরা বিষয়টি খেয়াল রাখছি। তাকে মুখে খাওয়ানোর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। হাতে নিয়ে মুখে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ক্ষতস্থানগুলো শুকনা রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে নতুন করে কোনো সংক্রমণ না হয়। হনুমানটি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আমরা আশাবাদী।’